বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
চলচ্চিত্র শিল্পীদের বর্ণাঢ্য মিলনমেলা

সম্মাননা পেলেন ১০ তারকা

আলাউদ্দীন মাজিদ

সম্মাননা পেলেন ১০ তারকা

সম্মাননাপ্রাপ্ত সুচন্দা, ববিতা, চম্পা, সোহেল রানা, ফারুক, আলমগীর, মাসুম বাবুল, ডিপজলের সঙ্গে মঞ্চে অন্য তারকারা

১০ বরেণ্য চলচ্চিত্র তারকাকে সম্মানিত করল চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। সম্মাননা পাওয়া তারকারা হলেন- সুচন্দা, ববিতা, চম্পা, সোহেল রানা, ফারুক, আলমগীর, রুবেল, শাবনূর, ডিপজল ও মাসুম বাবুল। মঙ্গলবার গাজীপুরের মেঘবাড়ি রিসোর্টে  প্রবীণ-নবীন তারকারা মেতে ওঠেন বনভোজনের মহাআনন্দে। এই আনন্দ আয়োজন বর্ণিল হয়ে উঠে যখন এই ১০ বরেণ্য তারকাকে পরিয়ে দেওয়া হয় উত্তরীয়, হাতে তুলে দেওয়া হয় ক্রেস্ট। সম্মানিত হওয়া তারকারা আবেগে আপ্লুত হয়ে একই সুরে বলেন, এই ভালোবাসা ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। এই প্রথম চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কোনো কার্যনির্বাহী কমিটি এমন সফল আর জমকালো একটি আয়োজন উপহার দিল। যা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তারা সমিতির সব কর্মকর্তা বিশেষ করে সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের সাফল্য কামনা করে তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। উৎসবে আরও ছিল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাপের খেলা, পুতুল আর বানর নাচ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সকাল সাড়ে আটটায় এফডিসি থেকে গাড়িবহর তারকা ও অতিথিদের নিয়ে রওনা হয় মেঘবাড়ি রিসোর্ট অভিমুখে। সেখানে পৌঁছলে সমিতির সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদক অতিথিদের লাল গোলাপ দিয়ে বরণ করে নেন। এরপর চা-নাস্তা পর্ব সেরে সবাই মেতে উঠেন খোশ গল্প আর আনন্দ আয়োজনে। প্রবীণ আর নবীন, মানে অভিনেত্রী রানী সরকার, কৌতুক অভিনেতা আনিস, খলনায়ক বাবর থেকে শুরু করে ডি এ তায়েব, বাপ্পী, আমানরা আয়েজনকে মুখর করে তুলেন। রানী সরকার বলেন, ষাটের দশক থেকে চলচ্চিত্রের অনেক বনভোজনে যোগ দিয়েছি।

আজকের আয়োজনের শৃঙ্খলা, সাজসজ্জা, বাহারি সব খাবারের আয়োজন আমার মন কেড়েছে। বুড়ো বয়সে এই ঝলমলে আয়োজনে এসে মনে হচ্ছে আমিও রঙের মেলায় ডুবে রং মাখা তরুণী হয়ে গেছি। আনিস বলেন, দেখেন মিশা আর জায়েদ কি কাণ্ডটাইনা করেছে। সবাইকে আনন্দ দিতে সাপ খোপ, পুতুল, বানর যা পেয়েছে ধরে এনেছে। বলতে বলতে তৃপ্তির হাসি হেসে ওঠেন তিনি। নির্মাতা ছটকু আহমেদ বনভোজনে এসে চারদিকে রঙের সমাহার দেখে রীতিমতো যুবক হয়ে গিয়েছিলেন, সুশ্রী নায়িকাদের ভিড়ে নিজের অজান্তে হারিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। মঞ্চে ববিতাকে নিয়ে নায়ক আলমগীর রোমান্টিক গানের চার লাইন গাইলেন, ববিতাও কম যান না, গানের তালে সদ্য যুবতীর মতো কোমর দুলিয়ে নাচলেন। এরপর ববিতা আর ফারুককে একসঙ্গে মঞ্চে এনে আলমগীর গাইলেন এই দুই তারকার ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ছবির গান ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার বারিস্টার’। গানটি শুরু হলে সব বয়সী দর্শক-শ্রোতারা উন্মাতাল নৃত্যে মেতে উঠেন। প্রতীক হাসানের গানে নাচেন শাবনাজ-নাঈম, রিয়াজ-শাবনূর, ফেরদৌস-শাবনূর। আসিফ আকবর যখন গাইলেন ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ তখন শাবনূর দুহাত বাড়িয়ে রিয়াজকে বললেন, ‘এই তো আমি হেথায়’। মঞ্চে তাদের নানা খুনসুটি দর্শকদের বাঁধভাঙা আনন্দ দেয়। র‍্যাফেল ড্র তে প্রথম পুরস্কার ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা বিমানের টিকিট আর সেখানকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে তিন দিন থাকার জন্য কাউপেল টিকিট পান চিত্রনায়িকা পপি। পপি সিঙ্গেল হওয়ায় রিয়াজ, ফেরদৌসসহ অনেকে তার সঙ্গে যাওয়ার বায়না ধরেন। কিন্তু এই দুইজন বিবাহিত বলে পপি তাদের বায়না বাতিল করে দেন। এই সুযোগে নৃত্য পরিচালক মাসুম বাবুল রীতিমতো ব্যাগ-ব্যাগেজ নিয়ে পপির সঙ্গে কলকাতা যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যান। চারদিকে তখন শুধুই হাসির রোল। উৎসবের আনন্দ বাড়িয়ে দেয় রবি চৌধুরী, মনির খান, মমর জনপ্রিয় সব গান। আকর্ষণীয় উপস্থাপনা দিয়ে মঞ্চ মাতিয়ে রাখেন রিয়াজ আর ফেরদৌস। রাতের নিকষ কালো আকাশ আলোকিত হয়ে উঠে আতশবাজি আর ফানুসের রংধনুতে। এমন সব বাঁধভাঙা আনন্দ মাঘের কনকনে শীতকেও হারিয়ে দেয়। উৎসবের পরম উষ্ণতা হৃদয়ে মেখে এক সময় নিজেদের গন্তব্যে পা বাড়ান ঝলমলে সব তারকা। সবার চোখে-মুখে তখনো লেপ্টে ছিল গভীর আনন্দের রেশ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর