শুক্রবার, ১৮ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ : আবুল হায়াত

নিয়মিত-অনিয়মিতভাবেই মঞ্চে দেখা যাবে

নিয়মিত-অনিয়মিতভাবেই মঞ্চে দেখা যাবে

নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় বর্ণাঢ্য উৎসবের মাধ্যমে উদযাপন করল প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর আর নিয়মিত দর্শনির বিনিময়ে নাটক প্রদর্শনের ৪৫ বছর। উৎসব ও ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বরেণ্য অভিনেতা আবুল হায়াতের সঙ্গে কথা আলাপনে— পান্থ আফজাল

 

নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠার ইতিহাস আপনার মাধ্যমে জানতে চাই? 

আসলে থিয়েটার নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্য নিয়েই মূলত আমাদের পথচলা শুরু হয়েছিল। তবে ১৯৬৮ সালে টেলিভিশনে সফোক্লিসের ‘ইডিপাস’ এর মাধ্যমে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের যাত্রা শুরু হয়। মূলত জিয়া হায়দার ও আতাউর রহমানের চিন্তা-চেতনায় এই গ্রুপের কার্যক্রম তখন এগিয়েছে। অনেকেই এই দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন, আবার মতের অমিল হওয়ার কারণে অনেকেই দল ছেড়ে চলেও গিয়েছিলেন। আমি এই দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম ৬৮ সালের দিকে। সেই সময় ছিলেন ড. ইনামুল হক, গোলাম রাব্বানী, সুলতানা কামাল লুলু, নাসিমা খান, সিরাজ নামের একজন ভদ্রলোক। আরও অনেকেই ছিলেন; নাম এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না। আমরা সবাই মিলে তখন মঞ্চে নাটক করার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু পারিনি বিভিন্ন কারণে। তাই দলকে জিইয়ে রাখতে আমরা রেডিও শো করতাম। নাগরিক দর্শনির বিনিময়ে নাটক শুরু করেছে ১৬ জুলাই ১৯৭২ সালে আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ওয়াপদা মিলনায়তনে মাইকেল মধুসূদনের ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ নাটকের মাধ্যমে। নাটকে আমি ছাড়াও ছিলেন আলী যাকের, ড. ইনামুল হক, নিলুফার বেগম, নাসিম বানু, লাকী ইনাম, রেখা আহমেদ। শো হয়েছিল মাত্র দুটো। আর নিয়মিত দর্শনির বিনিময়ে প্রথম শো হয় ব্রিটিশ কাউন্সিল মিলনায়তনে ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩-এ আলী যাকেরের নির্দেশনায় ‘বাকি ইতিহাস’ নাটকের মাধ্যমে। ‘বাকি ইতিহাস’ নাটকের প্রধান চরিত্রে আমি অভিনয় করেছিলাম। সারা যাকেরও অভিনয় করেছিল। আর এই চরিত্রে অভিনয় করে বাংলাদেশে মঞ্চ অভিনয়ে প্রথম পুরস্কার ‘SEQUENCE AWARD OF MERIT FOR INTRODUCIN NATURALISTIC ACTING ON BANGLADESH STAGE’-অর্জন করেছিলাম। তখন ৮টি কি ১০টা শো হয়েছিল পরপর রবিবার সকাল ১১টায়। তারপর ব্রিটিশ কাউন্সিল আমাদের হল দিতে অপারগতা জানায়।

 

নাগরিক দর্শনির বিনিময়ে নিয়মিত নাট্যচর্চার ৪৫ বছরে কতটি প্রযোজনা মঞ্চস্থ করে?

প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর ও দর্শনির বিনিময়ে নিয়মিত নাট্যচর্চার ৪৫ বছরে ৪৫টি প্রযোজনা করেছে। উৎসবে মঞ্চস্থ হয় নাগরিকের ৪৫তম প্রযোজনা ‘ওপেন কাপল’, যেটির নির্দেশনায় ছিলেন সারা যাকের। তবে আগের মতো তেমন করে নাগরিক নাটক মঞ্চস্থ করতে পারছে না। কারণ সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। মূলত আলী যাকের, আতা ভাই আর সারা যাকেরই নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় দলটিকে ধরে রেখেছে।

 

‘দেওয়ান গাজীর কিচ্ছা’র বদৌলতে মঞ্চে  ফিরেছিলেন। আবারও মঞ্চে কবে দেখব?

মঞ্চে কাজ করার ইচ্ছে তো আছেই। তবে নিয়মিত-অনিয়মিতভাবেই আমাকে মঞ্চে দেখা যাবে। নতুন একটি প্রযোজনা করার চিন্তা করছি। তাই নতুন কোনো প্রযোজনা দিয়ে বা পুরনো কোনো প্রযোজনা দিয়েও মঞ্চে ফিরতে পারি।

 

নাগরিকের কয়টি নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন?

৩টি নাটকের। এর মধ্যে রবীন্দ্রনাথের ‘বিসর্জন’ ও ‘রথের রশি’ আর একটি পথনাটক ‘ঢোল’। 

 

এবার আপনার বর্তমান ব্যস্ততার খবর জানতে চাই?

কিছু একক ও সিরিয়ালে কাজ করছি। ঈদ উপলক্ষে রাবেয়া খাতুনের গল্প নিয়ে আর আমার চিত্রনাট্যে একটি নাটক বানিয়েছি। অনেক ভালো স্ক্রিপ্ট হয়েছে বলা যায়। চলচ্চিত্র ‘ফাগুন হাওয়ায়’ কাজ করেছি।

সর্বশেষ খবর