শনিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

গানের পাখি চন্দনা

আলী আফতাব

গানের পাখি চন্দনা

চন্দনা মজুমদার, কুষ্টিয়ার গড়াই নদীর পাড়ে তার জন্ম। বাবা নির্মলচন্দ্র মজুমদার লালনগীতির শিল্পী হলেও তিনি চেয়েছিলেন নজরুলগীতি করুক চন্দনা। কিন্তু কুষ্টিয়া, পারিবারিক পরিবেশ আর ফরিদা পারভীনের গান তাকে নিয়ে আসে লালনের সুরে। লালনের বাইরে রাধারমণ, হাছনরাজা, শাহ্ আবদুল করিম আরও বিভিন্ন গীতিকবির গান করেন তিনি। এ ছাড়া কিছু চলচ্চিত্রেও গান গেয়েছেন চন্দনা মজুমদার। তার মধ্যে ‘মনপুরা’ চলচ্চিত্রের একটি গান অনেক পরিচিতি পায় এবং তাকে এনে দেয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তার সহধর্মী কিরণচন্দ্র রায়ও বাউল গানের শিল্পী। তাই গানের ব্যাপারে তাদের বোঝাপড়াটা বেশ ভালো। লালন সাঁই, শাহ্ আবদুল করিম, বিজয় সরকারের গান নিয়ে অ্যালবাম করেছেন তিনি কিন্তু রাধারমণের গান নিয়ে কোনো অ্যালবাম করা হয়নি তার। এবার তার ইচ্ছা পূরণ হলো। এরই মধ্যে বাজারে এসেছে ‘প্রাণবন্ধু বিহনে’ শিরোনামের একটি গানের অ্যালবাম। যেখানে স্থান পেয়েছে ১০টি গান। আর এটি প্রকাশ করেছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। অনেকের মতো আমাদের মনেও প্রশ্ন ছিল, এ পর্যন্ত ৪০টির মতো অ্যালবাম করেছেন। কিন্তু নজরুলের গান নিয়ে একটাও নয় কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার একক অ্যালবাম ৩২টির মতো। মিক্সড সাত-আটটি। লোকগান করতে করতে এদিকেই বেশি ঝুঁকে পড়েছি। এ কারণে নজরুলের গান নিয়ে অ্যালবাম করা হয়নি। ঘরে নিয়মিত নজরুলচর্চা করি। নজরুলের গানের ওপর কোর্স করেছি, তালিম নিয়েছি। নজরুলের গান শুনলেই আবেগে আপ্লুত হই। ইচ্ছা আছে নজরুলের লোক আঙ্গিকের কিছু গান নিয়ে একটি অ্যালবাম করার।’ চন্দনা মজুমদার ও কিরণচন্দ্র রায়ের যুগলজীবনের প্রায় ৩০ বছর হতে চলল। বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠানে কিংবা স্টেজে গান পরিবেশন করেছেন অনেক। কিন্তু একসঙ্গে কোনো অ্যালবাম নেই। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তিনি বাউল গানের শিল্পী। নিজে লেখেন, সুর করেন, আবার নিজেই কণ্ঠ দেন। কেন জানি আমাদের দুজনের একসঙ্গে কোনো অ্যালবাম করা হয়ে ওঠেনি! তবে একসঙ্গে অনেক অনুষ্ঠানে গেয়েছি। দুজন মিলে একটি অ্যালবামের পরিকল্পনা করেছি এবার। বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কথা হয়েছে। দেখা যাক।’ এই পরিবারে আরও একজন গানের শিল্পী আছে। আর সে হলো তাদের মেয়ে শতাব্দী রায়। নিজের মেয়েকে নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘গানটা আমাদের রক্তের সঙ্গে মিশে আছে। ওকে যদি আমরা না শেখাতেও চাই তবু গাইতে পারবে। ইদানীং টেলিভিশনে গান করছে। যারা ওর গান শুনেছে, বেশ প্রশংসা করেছে। ও নিজের পথ নিজেই বেছে নিক, আমাদের কোনো জোর নেই। তবে আমাদের চাওয়া হচ্ছে, যদি গানই করতে চায় তাহলে আগে শিখতে হবে।’ অনেক কাজের ক্লান্তি যখন শরীরে ভর করে তখন তিনি ছুটে যান বাগানে। টবে লাগানো নানা প্রজাতির গাছ নিজের হাতে পরিচর্যা করেন। মাঝে মধ্যে হাতে তুলে নেন গল্পের বই। কিন্তু তার শখের জায়গাটা জুড়ে আছে সেলাই করা। সময় পেলেই কাপড়ের জমিনে বপন করেন নানা রঙের সুতা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর