সোমবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ : ফারুক

ভিনদেশি কৃষ্টিকালচার কেন অনুকরণ করছি?

ভিনদেশি কৃষ্টিকালচার কেন অনুকরণ করছি?

চলচ্চিত্রের মিয়াভাই খ্যাত অভিনেতা ফারুক অভিনয় থেকে দীর্ঘদিন দূরে থাকলেও এই শিল্পের নানা কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছেন। বর্তমান সময়ের চলচ্চিত্র জগৎ ও অন্যান্য নানা বিষয়ের কথা তুলে ধরেছেন— আলাউদ্দীন মাজিদ

 

অভিনয় থেকে দীর্ঘদিন দূরে থাকা কেন?

আমিতো একজন অভিনেতা, আমি চাই নিয়মিত অভিনয় করে যেতে। কিন্তু মানসম্মত গল্প, নির্মাতা আর চরিত্র কোথায়। বলিউড বা হলিউডে এখনো সিনিয়রদের ঘিরে গল্প আর চরিত্র তৈরি হয়। এখানে এখন সেই মেধা সম্পন্ন গল্পকার আর নির্মাতা কি আছে?

 

এখনকার নির্মাতাদের বিষয়ে কী বলবেন?

এখন যারা আসছেন তারা কারা? চলচ্চিত্র সম্পর্কে তাদের জ্ঞান কতটুকু? তাদের বেশিরভাগই নির্মাণের আড়ালে অন্য উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেই চলচ্চিত্রকে বেছে নেয়। একজন নারায়ণ ঘোষ মিতা, আমজাদ হোসেন, কাজী জহির, সুভাষ দত্ত, খান আতাউর রহমানের মতো নির্মাতা কি আর কখনো এদেশে জন্মাবে। আমার তো মনে হয় না। তারপরেও আমি আশাবাদী।

 

আমজাদ হোসেন, গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মতো কিছু গুণী নির্মাতা এখনো আছেন, তারা নির্মাণে আসছেন না কেন?

কীভাবে আসবেন, সত্যিকারের লগ্নিকারক মানে প্রযোজক কোথায়? একজন চলচ্চিত্রবান্ধব প্রযোজকের জন্য তারাতো সব সময় মুখিয়ে আছেন। যতদিন চলচ্চিত্রপ্রেমী প্রযোজক নির্মাণে না আসবেন ততদিন এই শিল্প অন্ধকারাচ্ছন্ন থেকেই যাবে।

 

আপনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক? রাজনীতিতে ইদানীং সক্রিয় নেই কেন?

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে সত্যিকার অর্থে বাঙালি জাতিকেই হত্যা করা হয়েছে। এখন দেখি অনেকেই চিৎকার করে বঙ্গবন্ধুর জন্য বিলাপ করেন। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন— এই মহান নেতাকে আর চার জাতীয় নেতাকে যেদিন হত্যা করা হয় তখন আপনারা কোথায় ছিলেন, তখন কেন কোনো প্রতিবাদ করেননি। আপনারা কারা? আমার মতো বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকরা আওয়ামী লীগের প্রতিটি ক্রান্তিলগ্নে সব রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে আন্দোলনে ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের পথ বহু অপচেষ্টা সত্ত্বেও কেউ কোনোদিন গতিরোধ করতে পারেনি, পারবেও না।

 

চলচ্চিত্রের উন্নয়নে কী করা দরকার বলে মনে করেন?

চলচ্চিত্রের উন্নয়ন তখনই সম্ভব যখন এ অঙ্গনের প্রতিটি মানুষের মধ্যে নিজের দেশ আর কৃষ্টি কালচারের প্রতি শতভাগ মমত্ববোধ থাকবে। ঐক্য থাকবে। আমরা কেন আমাদের নিজস্ব মৌলিক গল্প নিয়ে না এগিয়ে বিদেশি কৃষ্টি কালচারের কাছে নিজের স্বত্বাকে বিসর্জন দিচ্ছি। কেন ভিনদেশি ছবি এদেশে চালাতে অপতৎপরতা চালাচ্ছি। ভারত আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ও ভালো বন্ধু। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের অবদানের কথা কখনো ভুলব না। তাই বলে তাদের কৃষ্টি কালচার কেন আমরা অনুকরণ করতে যাব? আমরা যদি আবার এদেশের মাটি ও মানুষের গল্প নিয়ে কাজ করি তাহলে অবশ্যই দেশীয় চলচ্চিত্রের সোনালি দিন ফিরে আসবে।

সর্বশেষ খবর