রবিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঢাকাই ছবিতে ভিনদেশিদের দাপট

এক দেশের শিল্পী আরেক দেশের ছবিতে কাজ করবেন এটি স্বাভাবিক ব্যাপার। তাই বলে কারও অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়বে তা কখনো কাম্য হতে পারে না

আলাউদ্দীন মাজিদ

ঢাকাই ছবিতে ভিনদেশিদের দাপট

ঢাকাই ছবিতে বিদেশি শিল্পী আর নির্মাতাদের কাজ বেড়েছে। এতে ক্ষুব্ধ দেশীয় শিল্পী-নির্মাতারা। তাদের কথায় ছবির অভাবে দেশীয় শিল্পী আর নির্মাতারা  বেশির ভাগই বেকার। তখন বিদেশিদের দেশি ছবিতে কাজ করানো হলো মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা-এর মতো।

ঢাকাই ছবিতে কলকাতার বা অন্য দেশের শিল্পীদের নিয়ে স্বাধীনতার পর থেকেই কাজ চলছে। নির্মাতা আর  শিল্পীরা বলছেন, তখন প্রচুর ছবি নির্মাণ হতো এদেশে। শিডিউল পাওয়া যেত না শিল্পীদের। এখনকার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। দেশে ছবি নির্মাণের হার কমেছে। অনেক প্রযোজক দেশীয় ছবি নির্মাণ করছেন বিদেশি নির্মাতা, শিল্পী, কলাকুশলী, টেকনিশিয়ান নিয়ে। প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সুচন্দা, আমজাদ হেসেন, আজিজুর রহমান, ছটকু আহমেদ, বদিউল আলম খোকনসহ অনেকেই বলেছেন, আগে দেশীয় নির্মাতা, শিল্পী, কলাকুশলী আর টেকনিশিয়ানদের কাজ দিয়ে বাঁচাতে হবে। ২০১২ সাল থেকেই মূলত কলকাতার চলচ্চিত্রকারদের এদেশের ছবিতে কাজের দাপট বেড়েছে। সিনিয়র চলচ্চিত্রকারদের কথায় কলকাতার ছবির বাজারে মন্দাভাব চলছে। সেখানকার শিল্পীদের হাতে তেমন কাজ নেই। এতে আমাদের এখানে শিল্পী সংকটের অজুহাত দেখিয়ে স্থানীয় কিছু প্রযোজনা সংস্থা কলকাতার শিল্পীদের ঢাকার ছবিতে কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে। অনেকে আবার বলছেন, দুই বাংলার মধ্যে শিল্পী বিনিময় হলে দুই দেশের সংস্কৃতির সম্পর্ক জোর পাবে। বর্তমানে ঢাকার ছবিতে কলকাতার নির্মাতা, শিল্পী, কলাকুশলীদের প্রায় নিয়মিত কাজ করা নিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সিনিয়র নির্মাতা বলেছেন, চলচ্চিত্রের বাজার সম্প্রসারণের নামে যৌথ ছবি বা স্থানীয় ছবিতে ভারতীয় নির্মাতা, শিল্পী, কলাকুশলী আনার মাধ্যমে ফায়দা লুটছেন একশ্রেণির অসাধু প্রযোজক। বিনোদনের আড়ালে তারা কালো টাকা সাদা করছেন। ভিনদেশি শিল্পীরা দেশের টাকা নিয়ে যাচ্ছেন ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে। ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া কাজ করতে গিয়ে ধরাও পড়েছেন অনেকে। এসব অসাধু কর্মকাণ্ডের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে দেশীয় নির্মাতা, শিল্পী, কলাকুশলীর ক্যারিয়ার এখন হুমকির মুখে। অনেকের কথায় শুধু অভিনয় শিল্পী, কলাকুশলী আর নির্মাতা নয়, কণ্ঠশিল্পী, ফাইট ও মিউজিক ডিরেক্টরসহ নানা কলাকুশলী কাজ করছেন ঢাকার ছবিতে। এতে বেকার হয়ে পড়ছেন স্থানীয় সংশ্লিষ্টরা। হুমকির মুখে পড়েছে দেশীয় চলচ্চিত্র শিল্প। চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন বলেন, এ ক্ষেত্রে একটি ভারসাম্যের নীতি থাকা দরকার। যাতে কোনো পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। যৌথ নির্মাণ বা এক দেশের শিল্পী আরেক দেশের ছবিতে কাজ করবেন এটি স্বাভাবিক ব্যাপার। তাই বলে কারও অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়বে তা কখনো কাম্য হতে পারে না।

সর্বশেষ খবর