সোমবার, ১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ : ফরিদুর রেজা সাগর

যত নতুন প্রযুক্তি আসবে টেলিভিশনের কদর ততই বাড়বে

যত নতুন প্রযুক্তি আসবে টেলিভিশনের কদর ততই বাড়বে

‘কোটি প্রাণে মিশে, আমরা এখন ২০ এ’ এই স্লোগানকে নিয়ে চ্যানেল আই উনিশ বছর পার করে এবার পা রাখছে বিশ বছরে।  চ্যানেল আইয়ের নতুন বছরে পদার্পণ উপলক্ষে কথা হয় ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগরের সঙ্গে।  কথা বলেছেন— আলী আফতাব

 

এবারের স্লোগান ‘কোটি প্রাণে মিশে আমরা এখন ২০-এ’ এর অর্থ কী?

টেলিভিশন দর্শকদের জন্য চ্যানেল আই কিছু কমিটমেন্ট নিয়ে সম্প্রচার শুরু করেছে। আমাদের দেশ, আমাদের এই ভূখণ্ড, আমাদের এই সংস্কৃতি তথা বাঙালি এবং বাঙালিয়ানাত্ব যা কিছু আমাদের শেকড়ে, সেগুলোকেই তুলে ধরবে চ্যানেল আই। সেই শুরু থেকে এখন অবধি চ্যানেল আই তার কমিটমেন্টেই রয়েছে। দেশের এবং দেশের বাইরের বাংলাদেশি দর্শকদের তাই মন জয় করে চলেছে জনপ্রিয় চ্যানেল আই। এখন বিশ্বের ছয়টি মহাদেশের কোটি কোটি বাঙালি দর্শকদের কাছে চ্যানেল আই মানুষের প্রিয় চ্যানেল। তাদের হৃদয়ে মিশে আছে ‘হৃদয়ে বাংলাদেশ’ স্লোগানটি। এই কোটি দর্শকদের সঙ্গে মিলেমিশেই এখন একাকার চ্যানেল আই।

 

১৯ বছরের পথচলা কেমন ছিল?

আমি আগেই বলেছি, চ্যানেল আই শুরুতেই কিছু কমিটমেন্ট নিয়ে পথচলা শুরু করে। বাঙালি সংস্কৃতি, বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্য, বিশেষ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এসব বিষয় নিয়েই কাজ করেছে চ্যানেল আই। চ্যানেল আই তার সে নীতি, আদর্শ থেকে একচুলও নড়েনি বরং নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তি নিয়ে নানান উদ্বুদ্ধমূলক অনুষ্ঠান নির্মাণ করেছে— যা দেশের মানুষের মধ্যে এক ধরনের চেতনা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।

 

আগামীর দিনগুলোর জন্য কী কী ভাবছেন?

আগামীর স্বপ্ন তো অনেক। যদি চ্যানেল আই-এর ১৯ বছরের পেছনের দিকে তাকান সে অতীত বড়ই বর্ণাঢ্য। নতুন নতুন আইডিয়া, নতুন নতুন অনুষ্ঠান নির্মাণের মাধ্যমে চ্যানেল আই এগিয়ে নিয়ে গেছে এই গণমাধ্যমের সব শাখাকে। সে রকম আগামীতেও আমাদের ইচ্ছে আছে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার।

 

অভিযোগ আছে, বাংলাদেশের টিভির দর্শক কমে যাচ্ছে।

কথাটি সত্য নয়। কারণ কোনো অনুষ্ঠান খারাপ গেলে কিংবা অনুষ্ঠান ভালো না লাগলে দর্শক যেভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া দেন তাতে মনে হয় না দর্শক কমে যাচ্ছে। দর্শক বেড়েছে বলেই আমার মনে হয়। অতিসম্প্রতি অনেকে বলার চেষ্টা করছেন, তরুণ সমাজ আজকাল নাকি পর্দার সামনে বসে না। তারা ব্যস্ত ফেসবুক, ইউটিউব নিয়ে। কিন্তু সত্যিকার গভীরভাবে কেউ যদি ভাবেন তাহলে দেখবেন টেলিভিশনের অনুষ্ঠান এখন দর্শকদের কাছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাল রেখে পাশাপাশি চলছে।

 

আগে বলা হতো টেলিভিশন হচ্ছে ইরেজ মিডিয়া। এখানে কোনো কিছু সংগ্রহে থাকে না। আপনি কী মনে করেন?

হ্যাঁ, এটা এক সময় মনে করা হতো। বাংলাদেশ টেলিভিশন কিংবা চ্যানেল আই অথবা অন্য চ্যানেলগুলোর আর্কাইভে কিছু কিছু অনুষ্ঠান জমা রয়েছে। কিন্তু দ্রুত ফরম্যাট পরিবর্তনের কারণে আর্কাইভেও এই সব অনুষ্ঠান দীর্ঘদিন সংরক্ষিত হচ্ছে না। আর আর্কাইভ থেকে বের করে এসব অনুষ্ঠান সাধারণ দর্শক আরেকবার দেখার কথা কল্পনাই করতে পারে না। এখন টেলিভিশনের অনুষ্ঠান আর হারিয়ে যাচ্ছে না। আর্কাইভের হিমশীতল কক্ষে বন্দীও হচ্ছে না। টেলিভিশনের অনুষ্ঠান একবার প্রচার হয়ে যাওয়ার পরই এখন রয়ে যাচ্ছে ইউটিউব, নেটফ্লিক্স, আমাজন এই ধরনের নানা রকম ডিজিটাল আর্কাইভে। যখন খুশি সেই অনুষ্ঠানগুলো দর্শক উপভোগ করতে পারেন। সুতরাং যত নতুন প্রযুক্তি আসবে ততোই টেলিভিশন অনুষ্ঠানের কদর বাড়বে। বাড়বে সমাদরও।

 

আপনি সুপরিচিত লেখক, নতুন কোনো বই লিখছেন?

যখনই অবসর পাই তখনই লিখতে বসি। কোনো উপলক্ষ কিংবা কোনো কিছুকে টার্গেট করে বই লেখা হয় না। তবে যখনই ইচ্ছে হয় তখনই লিখি। যেমন সাম্প্রতিক আমার লেখা ‘মানুষের মুখ-৭’ এবং ‘ছোট কাকু’ সিরিজের আরও একটি বই প্রকাশ হয়েছে। এ ছাড়া আরও একটি বই প্রকাশের জন্য প্রকাশকের কাছে জমা পড়েছে। ‘মানুষের মুখ-৮’ নামে বইটি শিগগিরই প্রকাশ হবে।

সর্বশেষ খবর