সোমবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভরসা এখন শাকিব আর কলকাতার ছবি...

আলাউদ্দীন মাজিদ

ভরসা এখন শাকিব আর কলকাতার ছবি...

চলচ্চিত্র প্রদর্শক মানে সিনেমা হল মালিকদের কথায় ‘ভরসা এখন শাকিব খান আর কলকাতার ছবি’। দুই হাজার সালের প্রথম থেকে এখন পর্যাপ্ত সিনেমা হলের মালিকরা শাকিবের ছবির দিকেই তাকিয়ে থাকতেন। এই নায়ক ১৯৯৬ সালে চলচ্চিত্রে এলেও ২০০৬ সালে তার অভিনীত এফ আই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিটি ছিল শাকিবের অভিনয় জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। এই ছবিটি বাম্পার হিট হলে শাকিব রাতারাতি বনে যান ঢাকাই ছবির শীর্ষ নায়ক এবং প্রদর্শকদের ভরসার পাত্র। ২০০৮ সালে নায়ক মান্নার আকস্মিক মৃত্যু এবং অভিনয়ে রিয়াজ অনিয়মিত হয়ে পড়লে শাকিব ছাড়া অন্য নায়করা সাড়া জাগাতে ব্যর্থ হন। ২০১৬ সালে জাজ মাল্টিমিডিয়া শাকিবকে নিয়ে নির্মাণ করে কলকাতার সঙ্গে যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘শিকারি’। ছবিটিতে দীর্ঘদিনের চেনা শাকিবের পরিবর্তে ভিন্ন লুকের নতুন এক শাকিবকে পেয়ে দর্শক আবার নড়েচড়ে বসে।

ছবিটি সিনেমা হল মালিকদের প্রত্যাশা পূরণ করে। এরপর যৌথ আয়োজনের নবাব, চালবাজ, ভাইজান এলোরে ছবিগুলোও দর্শক গ্রহণ যোগ্যতা পায়। তবে সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘নাকাব’ ছবিটি আশানুরূপ সাড়া জাগাতে পারেনি। এর কারণ হিসেবে ছবির অন্যতম প্রযোজক জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজ বলেন, শাকিব এখন আবার গতানুগতিক ধারার গল্পের ছবিতে অভিনয় করা শুরু করেছেন। তাকে চরিত্র ও গল্প বেছে ছবি করতে হবে। তা না হলে ঢাকাই চলচ্চিত্রে শাকিব অধ্যায়ের অবসান ঘটবে অচিরেই।’

 

 প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার নওশাদ বলেন, শাকিব নিজেই নিজের ক্যারিয়ারের বিপদ ডেকে আনছেন। যেখানে যৌথ আয়োজন এবং কলকাতার কিছু মানসম্মত ছবিতে অভিনয় করে তিনি তার পড়ন্ত ক্যারিয়ারকে চাঙ্গা করেছেন সেখানে আবার কেন পেছনের দিকে ফিরে যাচ্ছেন। এখনো সময় আছে, শাকিবকে বুঝেশুনে কাজ করতে হবে।’ এদিকে দীর্ঘদিন ধরে যখন দেশীয় মানসম্মত ও পর্যাপ্ত ছবির অভাবে দর্শক শূন্য সিনেমা হল বন্ধ রোধ করা সম্ভব হচ্ছিল না তখন সিনেমা হল টিকিয়ে রাখতে ২০১৪ সাল থেকে প্রদর্শকরা কলকাতার ছবি আমদানি করে প্রদর্শন করে আসছিল। এ পর্যন্ত প্রায় একডজনের মতো কলকাতার ছবি আমদানি করলেও ছবিগুলো দর্শক আগ্রহ লাভে ব্যর্থ হয়। এর কারণ হিসেবে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক  আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল বলেন, পর্যাপ্ত ও মানসম্মত দেশীয় ছবি না পেয়ে সিনেমা হল বাঁচাতে আমরা কলকাতার ছবির ওপর ভরসা করেছিলাম।

কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। এর কারণ কলকাতার ছবি আমদানিতে নানা জটিলতার কারণে সেখানে মুক্তির অনেক পড়ে ছবিটি এখানে প্রদর্শন হয়। আর এই বিলম্বের কারণে ছবিটি আগেই বিভিন্ন মাধ্যমে এখানকার দর্শকদের দেখা হয়ে যায়। ফলে দর্শক আর এখানকার সিনেমা হলে ছবিটি দেখতে যায় না। কলকাতার বা যৌথ প্রযোজনার ছবি দুই দেশে একসঙ্গে মুক্তি দিতে না পারলে এই সমস্যার সমাধান কখনো হবে না।

সর্বশেষ খবর