শনিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভালোবেসে যাব শুধুই তোমাদের...

আলী আফতাব

ভালোবেসে যাব শুধুই তোমাদের...

বাংলা ব্যান্ড জগতে জেমস এক উন্মাদনার নাম। তিনি একজন রক স্টার। তিনি তার ভক্তদের কাছে গুরু। জেমস মানেই তারুণ্যের উন্মাদনা। তার বাবড়ি দোলানো চুল আর উন্মাদনায় মেতে ওঠে লক্ষ-কোটি মন। সিনেমার গল্প থেকে কোনো কম নয় জেমসের জীবন কাহিনী। বোহেমিয়ান জীবনযাত্রা, খ্যাতি, প্রেম, বিচ্ছেদ, আপামর মানুষের আইকন হয়ে ওঠা। ১৯৮৬ সালে ঢাকায় এসে প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’ প্রকাশ করেন। এর পর আসিফ ইকবালের লেখা জেমসের প্রথম একক অ্যালবাম ‘অনন্যা’ [১৯৮৭] প্রকাশ হয়, যার প্রতিটি গানই অসাধারণ। তার পর ‘জেল থেকে বলছি’— এক ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির করুণ অনুভূতি ও আর্তনাদ জেমসকে নন মেটালিক আবেগী ধারার গায়ক হিসেবে পরিচিতি পাইয়ে দেয়। ১৯৯৫ সালে তার দ্বিতীয় একক ‘পালাবে কোথায়’ প্রকাশ হয়। অ্যালবামটি জেমসকে যেন রহস্যময় করে তোলে। জেমস যখন দেশের সংগীতাঙ্গনে আলোচিত নাম, সেই সময় তার কিছু সমালোচক তৈরি হয়। তারা বিরোধিতা করতে শুরু করে জেমসের গায়কী নিয়ে। ’৯৬ সালে সেসব সমালোচকের মুখে ছাই দেয় কবি শামসুর রাহমানের ‘সুন্দরীতমা আমার’ গানটি।

গানগুলো তখন পাড়া-মহল্লায় বড়-ছোট সবার মুখে। ‘দুঃখিনী দুঃখ করো না’ অ্যালবামটি এতটাই শ্রোতাপ্রিয়তা পায় যে, দেশের আপামর প্রেমিক-প্রেমিকাদের মনে জেমস স্থায়ীভাবে আসন গাড়েন। ২০০৬ সালে ভারতের খ্যাতিমান প্রযোজক ও পরিচালক মহেশ ভাটের ‘গ্যাংস্টার’ ছবিতে ‘ভিগি ভিগি’ গান দিয়ে হয়েছেন ভারতের কোটি মানুষের প্রিয় শিল্পী। এর পর একই প্রযোজকের ‘ওহ লামহে’ [লাইফ ইন এ মেট্রো] ছবিতেও কণ্ঠ দিয়ে চমকে দিয়েছেন পুরো ভারতকে। সর্বশেষ ‘ওয়ার্নিং’ সিনেমায় টাইটেল সং ‘বেবাসি’ ধারাবাহিকতা ঠিক রাখার সঙ্গে নিজের জনপ্রিয়তাকেও ঊর্ধ্বমুখী করেছেন। জানতে চাওয়া হয়, বলিউডের গানে পাওয়া গেল না কেন? জবাব, ‘পেশাদারভাবে কাজটা করতে হলে আমাকে মুম্বাইয়ে থাকতে হতো। আমার পক্ষে সেটা সম্ভব ছিল না। আর ওটা আমার জায়গা নয়।’

অনেক বছর অডিওতে পাওয়া না গেলেও চলচ্চিত্রের গানে হঠাৎ হঠাৎ পাওয়া যায় তাকে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চলচ্চিত্রে যে কয়েকটি গান গেয়েছেন, সবই সুপার হিট। সর্বশেষ গত বছরে ‘সত্তা’ ছবির ‘তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম’ গানটিও সবার মুখে মুখে। এখন স্টেজ শো নিয়ে তিনি ভীষণ ব্যস্ত। অনেক দিন আপনার নতুন কোনো গান নেই? জবাবে বলেন, ‘এক জীবনে যা গান গেয়েছি, এগুলো তো শেষ হবে না। তা ছাড়া এখন মন চাইছে না নতুন গান করি।’ ভক্তরা খুব ভালো করেই জানেন, আলোকচিত্রী হিসেবেও দারুণ জেমস। তার ফেসবুকে রয়েছে তার তোলা অনেক ছবি। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় অবসরে কিছু করার থাকে না। তখন ক্যামেরা নিয়ে নেমে পড়ি মাঠে। ছবি তোলার একটা অদ্ভুত নেশা আছে, যা শুধু যারা ছবি তোলেন তারাই ভালো বলতে পারবেন।’ আপনি অনেক ভালো ছবি তোলেন, জানি। ছবি নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করবেন না? তিনি বলেন, ‘ছবি তুলতে ভালো লাগে তাই তুলি। প্রদর্শনী হবে কি-না সেটা বলতে পারছি না। দেখি, সময় হলে বলা যাবে।’ ভক্ত শ্রোতাদের উদ্দেশে জেমস বলেন, আমি জেমস হয়ে ওঠার অন্যতম কারণ আমার শ্রোতা, দর্শক। আমি যত দিন বাঁচব, ভালোবেসে যাব শুধুই তোমাদের।

 

 

সর্বশেষ খবর