মঙ্গলবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ই ন্টা র ভি উ

কেকের ওপরে লেখাটি দেখে অবাক হয়েছিলেন

কেকের ওপরে লেখাটি দেখে অবাক হয়েছিলেন
শ্রোতাপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সেলিম চৌধুরী। কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের নাটকে সেলিম চৌধুরীর গাওয়া ‘আইজ পাশা খেলব রে শ্যাম’ সবারই মনে আছে। আজ অমর কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭০তম জন্মদিনে তার সঙ্গে বিভিন্ন  বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন— পান্থ আফজাল

 

আজ প্রখ্যাত সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭০তম জন্মদিন। এই দিনটিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

আগের জেনারেশনের তো তার জন্মদিন নিয়ে মাতামাতি করার কিছু ছিল না। তিনি যখন পপুলার হয়ে গেলেন তখন তার জন্মদিনে অনেকেই রাত ১২টা ১ মিনিটে ফুল বা কেক কেটে উইশ করত। তখন তার জন্মদিন নিয়ে মাতামাতি হতো। তিনি নেই-তার জন্মদিন পালন আর আগের মতো হয় না। পারসোনালি তার পরিবার, শাওন বা অন্য কেউ নিজেদের মতো করে ঘরোয়াভাবে পালন করে।

 

আপনার সঙ্গে তো খুবই ভালো সম্পর্ক ছিল। তাকে নিয়ে কোনো স্মৃতি রোমন্থন করবেন কি?

তার সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে।  এই মুহূর্তে জন্মদিন নিয়ে একটি স্মৃতি মনে পড়ছে। আমি অবশ্য অনেকবার তার জন্মদিনে উইশ করতে গিয়েছি; তবে কখনো ফুল নিয়ে যাইনি। আমার কাছে এটি ফরমাল মনে হয়। একবার প্রতীক প্রকাশনীর প্রকাশক আলমগীর রহমান আমাকে ফোন করে বলল, ‘স্যার তো সব সময় সারপ্রাইজ দেয়, এইবার আমরা দেব। চলো কেক কিনে নিয়ে যাই।’ তার কথায় রাত ১২টায় স্যারের বাসায় গেলাম। তিনি কেক কাটতে গিয়ে দেখলেন, কেকের ওপরে শুধু লেখা ‘কানাই তুমি খেইর খেলাও ক্যানে...’। তিনি অবাক হয়ে কয়েক মুহুর্ত আমাদের দিকে তাকিয়ে রইলেন। কারণ আমরা জানতাম তিনি হাসন রাজাকে খুবই পছন্দ করতেন। তিনি বললেন, ‘আমি খুবই সারপ্রাইজ হয়েছি, কেকের ওপরে এই লেখা দেখে।’

 

তার লেখা কয়টি গান গেয়েছেন?

তার লেখা প্রায় ৮-৯টি গান করেছি। এ ছাড়াও তার দক্ষিণা হাওয়ায়, নুহাশ পল্লীসহ বিভিন্ন ঘরোয়া অনুষ্ঠানে অনেক গানই করেছি। কোনো অনুষ্ঠান হলেই স্যার বলতেন, ‘সেলিমকে নিয়ে এসো।’ তবে তিনি আমার কণ্ঠে ‘বাউলা কে বানাইলো রে’, ‘মরিলে কান্দিস না’, ‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান’ গানগুলো খুবই পছন্দ করতেন।

 

‘প্যাকেজ সংবাদ’ নাটকে আপনার ‘চিকামারো’ গানটি একসময় সবার মুখে মুখে ছিল...

আমি তার দুটি নাটকে অভিনয় করেছি। একটি ‘প্যাকেজ সংবাদ’, অন্যটি ‘সমুদ্র বিলাস’। গান গাওয়ার সঙ্গে নাটকে অভিনয় করাটা তার ইচ্ছায়। আমার আসলে প্যাকেজ সংবাদ নাটকে অভিনয় করার কথা ছিল না। তখন ছিল প্যাকেজ নাটক কেনার হিড়িক। তাই তিনি এই বিষয়টি নিয়ে স্যাটারধর্মী একটি নাটক করতে চাইলেন। আমাকে প্যাকেজ নাটকের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একটি ক্যারিকেচার গান গাইতে বললেন। তিনি বললেন, ‘এই চিকামারো গানটি তোমার মেজাজে না গেয়ে একটু ফানি করে গাও। আর মিন্টুর সঙ্গে তুমিও অভিনয় করবে। তুমি নাচানাচি করে গানটি করবে।’ আমি এরপর কাঠমুলার কোম্পানির ড্রেস আর সানগ্লাস পরে এই চিকামারো গানটি করলাম।

 

তার লেখা গান নিয়ে কোনো কিছু করার ইচ্ছা নেই?

আসলে তার কাজ নিয়ে কোনো কিছু করার সাহস পাই না। তবে তার একটা গান আছে, যেটি নতুন করে করার ইচ্ছা রয়েছে। নির্বাসন সিনেমার ‘আজ আমাদের ছুটি’ নামের গানটি নতুন তৈরি করে তার  মেজাজে মিউজিক ভিডিও বানাতে চাই।

 

শুধু আপনার গানগুলো নিয়েই তো করতে পারেন...

এখন তো অ্যালবাম করার ব্যাপারও নেই। তবে আমার গাওয়া ৮-৯টি গান নিয়ে কিছু একটা করা যেতে পারে। ‘হুমায়ূন আহমেদের গান’ নামে একটি আইডিয়া করা যেতে পারে। ৪-৫টি গান নিয়ে করা যেতে পারে। তবে এই মুহূর্তে এসব নিয়ে ভাবছি না।

 

সবার ধারণা আপনি বিদেশে বেশি থাকেন। এটা কতটুকু সত্য?

এক সময় একুশে টেলিভিশনে ‘দিগন্ত’ নামের অনুষ্ঠান খুবই পপুলার হয়েছিল। এটি পরে বহুবার প্রচার হয়েছে। সিলেটী ভাষায় গান করেছিলাম। সায়মন ড্রিংক অনেক সাপোর্ট দিয়েছিলেন। সেটি ইংল্যান্ডে প্রচার হতো। অনেকে তাই মনে করতেন, আমি ইংল্যান্ডেই থাকি। আর আমি তো মিডিয়ায় কম আসি। তাই সবাই আমার সম্পর্কে কম জানে।

সর্বশেষ খবর