১৭ জানুয়ারি, ২০১৭ ১৬:৩৯

পাবনায় নানা কর্মসূচিতে মহানায়িকার প্রয়ান দিবস পালিত

পাবনা প্রতিনিধি:

পাবনায় নানা কর্মসূচিতে মহানায়িকার প্রয়ান দিবস পালিত

নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়িকা সুচিত্রা সেনের তৃতীয় প্রয়াণ দিবস পালিত হয়েছে তার নিজ জেলা পাবনায়। বুধবার সকালে পাবনা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র সংসদের স্মরণ সভার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিবসের কর্মসূচি। এছাড়া নাট্য সংগঠন পাবনা ড্রামা সার্কেল, একুশে বইমেলা পরিষদ, লালন স্মৃতি পরিষদ, মহীয়সী পাঠ চক্রসহ স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন পালন করেছে পৃথক কর্মসূচি। সন্ধ্যায় পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সুচিত্রা সেন অভিনীত চলচ্চিত্র মেঘকালো প্রদর্শনের আয়োজন করেছেন সুচিত্রা ভক্তরা।

সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি কমরেড জাকির হোসেন এর সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। নাট্য সংগঠক মুস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য দেন, পাবনা রিপোটার্স ইফনিটির সভাপতি প্রবীন সাংবাদিক হাবিবুর রহমান স্বপন, পাবনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আঁখিনূর ইসলাম রেমন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রেজাউল করিম মনি, কবি গোলাম রব্বানি, প্রভাষক সাহিত্যিক আখতারুজ জামান, চলচ্চিত্র নির্মাতা বাদল দেওয়ান, নাট্যকার নির্দেশক ফিরোজ খন্দকার, দোলন আজিজ প্রমুখ। 

সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি কমরেড জাকির হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন ও আইনি লড়াইয়ে কিংবদন্তী সুচিত্রা সেনের পাবনার বাড়ি জামায়াতের দখলমুক্ত করা হলেও সংরক্ষণের উদ্যোগ না থাকায় নষ্ট হচ্ছে মহানায়িকার স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি। দখলমুক্ত হওয়ার আড়াই বছরের পরেও শুরু হয়নি সংগ্রহশালা তৈরীর কাজ। অযত্ন অবহেলায় মহানায়িকার বাড়ীর সৌন্দর্য্য হারাচ্ছে। বাড়ির আঙিনা পরিণত হয়েছে মাদক সেবীদের আখড়ায়। চুরি হয়ে গেছে ভেতরের দরজা জানালা। দেশ বিদেশ থেকে আসা দর্শনার্থীরা ফিরে যাচ্ছেন তালাবদ্ধ বাড়ি দেখেই, এতে চরম ক্ষুব্ধ ও হতাশ তারা। 

পাবনার প্রবীণ সাংবাদিক হাবিবুর রহমান স্বপন বলেন, ১৯৩১ সালে ৬ এপ্রিল বৃহত্তর পাবনার বেলকুচির মামা বাড়িতে জন্ম নেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেন। পাবনা পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর করুনাময় দাশগুপ্তের কন্যা সুচিত্রার শৈশব ও কৈশর কেটেছে পাবনা পৌর এলাকার হেমসাগর লেনের বাড়িতে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর স্বপরিবারে কলকাতা চলে যাওয়া মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের বাড়ি যে পাবনায়, তা জানা ছিল না অনেকেরই। এ অজ্ঞতার সুযোগে সুকৌশলে বাড়িটি নিজ দখলে নিয়ে নেয় জামায়াত নেতা যুদ্ধাপরাধী আব্দুস সুবহান। গণমাধ্যমের সংবাদে বিষয়টি জানাজানি হলে বাড়িটি উদ্ধারে জেলার সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলন আর দীর্ঘ আইনি জটিলতা শেষে ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই পাবনা জেলা প্রশাসন বাড়িটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তালাবদ্ধ করেন। তবে আমাদের দাবি তো আর বাড়িটি তালাবদ্ধ রাখার জন্যে নয়। আমরা চাই বাড়িটি একটি সমৃদ্ধশালী সংগ্রহশালায় রুপান্তরিত করা হোক। 

প্রসঙ্গত, মহানয়িকা সুচিত্রা সেনের শৈশব কৈশর কাটে পাবনা পৌর এলাকার গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনের এই বাড়িতেই। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় স্বপরিবারে চলে যান ভারতে। ১৭ জানুয়ারী ২০১৪ সালে কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় পরলোক গমন করেন এই মহানায়িকা। 

 

বিডি প্রতিদিন/১৭ জানুয়ারি ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর