৩০ মার্চ, ২০১৭ ১৬:৫৬

চিকিৎসক হতে চেয়েছিলেন মডেল রাউধা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী:

চিকিৎসক হতে চেয়েছিলেন মডেল রাউধা

চোখের কারণে ১৪ বছর বয়সে মডেলিংয়ে জায়গা করে নেন রাউধা আতিফ। ‘নীল নয়না’ রাউধার ১৪ বছর বয়স থেকে শুরু মডেলিং। মালদ্বীপের জাতীয় টেলিভিশনে প্রথমবারের মতো একটি ক্যাম্পেইনে অংশ নেন। সেই ক্যাম্পটি ছিল পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করে বিকল্প ব্যাগ ব্যবহারের জন্য সচেতনতামূলক।

তবে মডেলিং ছিল তার শখ। লেখাপড়া শেষ করে তিনি চিকিৎসকই হতে চেয়েছিলেন। ইন্ডিয়ার ভোগ ম্যাগাজিন এমন তথ্যই দিচ্ছে। ভোগের সেই প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল ‘এই মেধাবী নারীরা বৈচিত্র্যের যোগ্য দূত।’ ভোগ ইন্ডিয়ার ওই প্রতিবেদনের জন্য দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাউধা বলেছিলেন, ‘মডেলিং আমার কাছে পেশা নয়; শখই বেশি। পড়াশোনা শেষ করে চিকিৎসক হয়ে মানুষকে সাহায্য করা আমার কাছে সব সময়ের জন্য স্বপ্ন।’ ১৪ বছর বয়সে মডেলিংয়ে নাম লেখানোর পর থেমে থাকতে হয়নি তাকে। ইন্টারনেটের যুগে ফেসবুক, টুইটারে ভাইরাল হয় তার ছবি। শুধু তাই নয়, তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন বিখ্যাত সাময়িকী ভোগ ইন্ডিয়ার প্রচ্ছদেও। মালদ্বীপের নাগরিক রাওধা আতিফ ভোগ ইন্ডিয়া ম্যাগাজিনের মডেল ছিলেন। ভোগ ইন্ডিয়া ম্যাগাজিনের অক্টোবর সংখ্যার প্রচ্ছদে অন্যান্য মডেলের সঙ্গে রাওধাও ছিলেন। নবম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে অক্টোবরে প্রকাশিত হয় ভোগ ম্যাগাজিনের সংখ্যাটি। 

রাউধার মেডিকেল কলেজে ভর্তির আবেদন ফরমে দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, মালদ্বীপের মালেতে তার বাড়ি। বাবার নাম মোহাম্মদ আথিফ। তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক। তার মা আমিনাথ মুহারমিমাথ একজন মানবসম্পদ কর্মকর্তা। রাউধা হিরিয়া স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ভিল্লা ইন্টারন্যাশনাল হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। তিনি ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

রাউধা ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের মহিলা হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার ২০৯ নম্বর রুমে থাকতেন। সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখে দরজা ভেঙে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ তাকে বের করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। ২০১৬ সালের ১৪ জানুয়ারি ওই কক্ষে উঠেন। তিনি বিদেশি কোটার ছাত্রী ছিলেন।

বাংলাদেশে পড়তে আসা মালদ্বীপের মডেল রাউধা আতিফ পিয়ানো শিখছিলেন দুই মাস ধরে। ভালো বাংলা বলতে পারতেন না, তাই বাংলা ভাষাটাও শিখছিলেন। নগরীতে বসবাসকারী যুক্তরাষ্ট্রের পিয়ানো বাদক জন থর্পের কাছে তিনি পিয়ানো শিখতেন। থর্প জানান, মিষ্টি একটা মেয়ে ছিল রাউধা। পিয়ানের প্রতি আগ্রহ ছিল। বাংলা খুব একটা বলতে পারত না, তাই বাংলাও শিখছিল। ও যে এ ধরনের কিছু করতে পারে এমন কোনো ইঙ্গিতই পাননি।
    
নগরীর শাহ মখদুম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, মডেল কন্যা ও মেডিকেল ছাত্রী রাউধা আতিফের মৃত্যুর ঘটনাটি তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। বুধবার পর্যন্ত তার ফেসবুক একাউন্টটি চালু ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সেটি বন্ধ পাওয়ায় যায়। কেউ তার ফেসবুক একাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে এ নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। তাই নেপথ্যের কারণ উদঘাটনে সবদিক বিবেচনা করা হচ্ছে। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার
 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর