‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের শক্তি, আমাদের মুক্তি’—এই স্লোগানকে ধারণ করে নজরুল চর্চাকেন্দ্র বাঁশরী আয়োজন করেছে দুইদিনের নজরুল নাট্যোৎসব। টাঙ্গাইল জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় এই উৎসবের সূচনা হয়।
উদ্বোধনী সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় কাজী নজরুল ইসলামের রচনা এবং বাঁশরীর প্রযোজনায় নাটক ‘সেতুবন্ধ’। নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন গোলাম সারোয়ার। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাঁশরী রেপার্টরি থিয়েটারের নিয়মিত শিল্পীরা।
নাটক প্রসঙ্গে নির্দেশক গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘প্রত্যেক নাট্যকারের নাটকে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকে। কবি নজরুলের নাটকের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। সেতুবন্ধ তার এক অনন্য সৃষ্টি। এ নাটকে কবিতা, গান, আবৃত্তি, এবং নৃত্যের সমন্বয়ে এক অপরূপ পরিবেশনা তৈরি হয়েছে। যদিও এটি নৃত্যনাট্য বা গীতিনাট্য বলা যাবে না, তবুও এ ধরনের একটি অসাধারণ নাটক মঞ্চস্থ করতে পারাটা এক দুঃসাহসিক অভিযাত্রা।’
বাঁশরীর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান বলেন, মানবতার কবি, সংগীতজ্ঞ ও উপন্যাসিক কাজী নজরুল ইসলামের নাট্যজীবন আমাদের কাছে অনেকটাই অজানা। কবির নাট্যভান্ডার সমৃদ্ধ এবং আমরা চেষ্টা করছি সেই নাটকগুলোকে সকলের সামনে উন্মোচন করতে। লুপ্তপ্রায় লেটো আঙ্গিককে আধুনিক যুগে তুলে ধরার প্রচেষ্টায় এই আয়োজন। ‘সেতুবন্ধ’ একটি প্রকৃতি সচেতনতা মূলক নাটক, যার মূল বার্তা হলো, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থে নদীর প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে তা সমাজের জন্য মঙ্গল নয়, বরং ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনে। নাটকটি যেন বর্তমান সময়ের জন্যই লেখা হয়েছিল।
বর্তমান সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নাটকের চর্চা অনেকটা স্তিমিত হলেও বাঁশরীর এই উদ্যোগ সাহসী এবং আশাব্যঞ্জক। আশা করা যাচ্ছে, দুই দিনের এই উৎসব প্রতিটি পরিবেশনায় দর্শক-শ্রোতাদের মনোরঞ্জন করবে।
নাটক মঞ্চায়নের আগে টাঙ্গাইলের স্থানীয় শিল্পীরা নজরুল সংগীত ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন। উৎসবের শেষ দিন শনিবার একই মঞ্চে মঞ্চস্থ হবে জাতীয় কবি রচিত নৃত্যনাট্য ‘বনের বেদে’। এটি বেদেদের জীবনকাহিনী নিয়ে রচিত নজরুলের এক অসাধারণ গীতি আলেখ্য, যা মঞ্চস্থ করবে ময়মনসিংহের একটি নৃত্যদল। এরপর ঢাকার শান্ত-মারিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশনায় মঞ্চস্থ হবে নাটক ‘বহর’।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল