২৬ এপ্রিল, ২০১৭ ১৭:২৫

আকাশীর একমাত্র প্রার্থনা ছিল...

মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি

আকাশীর একমাত্র প্রার্থনা ছিল...

আজ আকাশী অঝোরে মেঘের সাথে কাঁদছে আর সাথে হাসছেও। হাসার কারণ তার হয়তো প্রাণ খুলে হাসার দিন ফুরিয়ে আসছে শীঘ্রই। কেননা, ডাক্তার জানিয়ে দিয়েছে যে, গত কয়েক বছরের মধ্যে ঘটে যাওয়া কোন আঘাত আকাশীর মুখের উপর, তার মুখের ভিতর নার্ভগুলো চরমভাবে ক্ষতি-গ্রস্থ হয়েছে যে একের পর এক দাঁতগুলো মরে যাচ্ছে। ২৫ বছর পার হয়নি মেয়েটির ত্রিশ এর আগেই দাঁতগুলো হারিয়ে ফেলবে। দাঁতগুলো বিবর্ণ হওয়া শুরু হয়ে গেছে অনেক আগেই, মাড়ি ফোলন আর সাথে অসহ্যকর ব্যথা। 

আকাশীর মনে করতে কষ্ট হচ্ছে না, কবে কিভাবে সে সেই আঘাত পেয়েছিলো তার মুখে। পেটে তার তখন সাত মাসের সন্তান, বিভিন্ন কারণে তার দাম্পত্য জীবন ছিল অসহনীয়। তারই এক রেশ ধরে, তার স্বামী তাকে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলো। তখন আকাশীর একমাত্র প্রার্থনা ছিল, তার পেটের সন্তান এর যেন কিছু না হয়। বুঝেনি এতো সহজে যে আকাশী পার পাবে না।

আকাশী ডাক্তার দেখিয়েছিল ঋণ করে, এখন আর বহন করতে পারছে না। আর্থিকভাবে আকাশীকে সাহায্য করার কেউ নেই, পরিবারের কেউ নেই। তার স্বামী তো পালিয়েছে অনেক আগেই, দায়িত্ব এর ভার নেয়া যে সেই স্বামীর পক্ষে সম্ভব না, কেননা, সন্তান একটু বড় হওয়ার পর যখন দেখেছে সন্তানটি প্রতিবন্ধী, তখন সন্তানের মুখ দেখার কথা তো দূরে থাক্‌, শিশুটিকে বাবার আদর থেকে বঞ্চিত করে, দায়িত্ব এড়িয়ে মুখ ফিরিয়ে নিল চিরতরে। অথচ, একটি প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম কিন্তু এমনি এমনি হয় না, তার পিছনে কারণ থাকে সেই গর্ভধারিণী মায়ের মানসিক অথবা শারীরিক অবস্থা।

আকাশীর স্বামী (জয়) এমনিতে খুব ভালো মানুষ। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, কলিগরা এক কথায় জয়কে খুব পছন্দ করে, ভালো চোখে দেখে। শান্ত, ভদ্র, বিনম্র। এতো ভালো মানুষের সাথে আকাশীর এতো খারাপ সম্পর্ক হওয়ার কারন কি?
এক হাঁতে কি তালি বাজে? দোষ আকাশীরও আছে। আকাশীর দোষগুলোর বিশ্লেষণ থাকবে সামনের লেখাগুলোতে। আকাশী- ২

(লেখিকার ফেসবুক পেইজ থেকে সংগৃহীত)


বিডি-প্রতিদিন/২৬ এপ্রিল, ২০১৭/মাহবুব

সর্বশেষ খবর