১০ আগস্ট, ২০১৭ ১৬:২৮

নির্বুদ্ধিতার বেড়াজালে আবদ্ধ মুক্ত বুদ্ধির চর্চা!

গোলাম মওলা রনি

নির্বুদ্ধিতার বেড়াজালে আবদ্ধ মুক্ত বুদ্ধির চর্চা!

ফাইল ছবি

ষোড়শ সংশোধনীর চূড়ান্ত রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে মহল বিশেষের অতি প্রতিক্রিয়া এবং সন্তুষ্টির কোন কার্যকর কারণ এবং পরিণতি আমি খুঁজে পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে আমি হয়তো নির্বোধ হয়ে গিয়েছি।

আমার সিক্স সেন্স বলছে- সরকারের সঙ্গে উচ্চ আদালতের সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার কোন কারন যেমন নেই তেমনি সম্ভাবনাও নেই। দেশের নিরুত্তাপ রাজনীতি নিয়ে পশ্চিমা দেশের অভিযোগের জবাব সরকারের জন্য একটি বায়বীয় উত্তাপ জরুরী হয়ে পড়েছিল। ষোড়শ সংশোধনীর রায় প্রকাশের পর সরকারের জন্য আশির্বাদ স্বরূপ সেই উত্তাপ সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে।

বর্তমান সরকার সর্বান্তকরনে আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞ। যুদ্ধাপরাধের বিচার সরকারকে যে রাজনৈতিক সুবিধা দিয়েছে তা সমকালীন ইতিহাসে পৃথিবীর কোথাও ঘটেনি। 

অন্যদিকে একটি সিনেমা হলের মামলা নিষ্পত্তি করতে গিয়ে পঞ্চম সংশোধনী বাতিল এবং ত্রয়োদশ সংশোধনীর নামে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের রায় দিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি যা করেছেন তা আওয়ামীলীগ সারা জীবন কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করবে।

দশম পার্লামেন্ট নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩জন এমপি নির্বাচিত হবার ঘটনা ও আমাদের হাইকোর্ট নিষ্পত্তি করে দিয়েছে যার শতভাগ সুফল ভোগ করছে বর্তমান সরকার। এই অবস্থায় আমি যদি মনে করি যে উচ্চ আদালতের সঙ্গে সরকারের বিরোধ চলছে তবে আমার মতো নির্বোধের যায়গা কোথায় হওয়া উচিত তা ভেবে দেখার বিষয়।

বর্তমান প্রধান বিচারপতি ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে যে রায় দিয়েছেন তা সবদিক থেকে বাস্তব সম্মত। এতে সরকারের সামান্যতম ক্ষতি হয়নি। তিনি যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন তার বেশির ভাগ বক্তব্য বিগত সামরিক সরকারের বিপক্ষে গেছে। 
গণতন্ত্র, আইনের শাসন, রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গ সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেছেন তার দায় পড়েছে বিগত সময়ে ক্ষমতাসীন সকল দলের উপর। কাজেই পর্যবেক্ষণ নিয়ে সরকারী দলের প্রতিক্রিয়ার মধ্যে উচ্চ মার্গের রাজনীতি রয়েছে বলেই আমার বিশ্বাস।

বিগত দিনে, বিশেষ করে মীর কসিম ও মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর রায়ের পূর্বে উচ্চ আদালতের কিছু মন্তব্য শুনে মনে হচ্ছিলো সংশ্লিষ্ট আসামিরা বোধ হয় খালাস পেয়ে যাবেন। কিন্তু রায় প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট মহলের যখন ভুল ভাঙ্গলো তখন কপাল চাপড়ানো ছাড়া অন্য কোন উপায় তাদের ছিলো না। 

বর্তমান অস্থিরতার ও একটা চমৎকার নিষ্পত্তি হবে। তখন সরকারী দল মুচকী মুচকী হেসে চা-সিঙ্গারা বা চানাচুর মুড়ি খেয়ে বিরোধীদের নির্বুদ্ধিতার জবাব দেবে। অন্যদিকে, বর্তমানের উল্লাসকারীরা রাজধানীর অভিজাত ক্লাব, হোটেল-রেস্তোরা এবং ঘরোয়া বৈঠকে রঙিন জলসার আয়োজন করে হতাশা দূর করার চেষ্টা করবে।

(লেখকের ফেসবুক পেইজ থেকে সংগৃহীত)

বিডি প্রতিদিন/ ১০ আগস্ট, ২০১৭/ ই জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর