১৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০১:৫২

'আব্বা প্রায়ই বলতেন, বিদেশে চিরকাল থাকিস না'

রিমি রুম্মান

'আব্বা প্রায়ই বলতেন, বিদেশে চিরকাল থাকিস না'

আব্বা প্রায়ই বলতেন, বিদেশে চিরকাল থাকিস না, গুছাইয়া উঠলে একবারেই দ্যাশে চইলা আসিস। দ্যাশ হইলো শেকড়। এইখানে বাপ-দাদা'র ভিটা আছে, আত্মীয় স্বজন আছে। তোর সন্তান বিদেশে বড় হইলে চাচা-ফুফুদের চিনবো না, মামা-খালাদের চিনবো না। এইটা কোন জীবন হইলো?

আমরাও ভাবতাম, একটু গুছিয়ে উঠলেই ফিরে যাবো নিজের শেকড়ে। কিন্তু আমাদের আর গুছিয়ে উঠা হয় না। আমাদের ফিরেও যাওয়া হয়ে উঠে না।

আমরা চাচা-ফুপু, মামা-খালাদের সান্নিধ্যে বেড়ে উঠেছি। বাড়িতে আত্মীয়দের আসা-যাওয়া ছিল। রিয়াসাত, রিহান বিদেশে জন্মেছে, বেড়ে উঠছে যদিও, কিন্তু তাই বলে আত্মীয়দের সান্নিধ্য থেকেও বঞ্চিত নয়।

ওদের চাচা-চাচী এসেছিলো দেশ থেকে। মুখর ছিল বাড়িটি ক'দিন। বছর জুড়ে নিকটাত্মীয় কেউ না কেউ আসছে। ক'দিন থাকছে। আবার চলেও যাচ্ছে। দেশ থেকে কেউ আসবে শুনলে ওরা উচ্ছ্বসিত হয়। চলে গেলে ক'দিন তীব্র মনখারাপের নিস্তব্দতায় ডুবে থাকে। এই যে সম্পর্কের প্রতি এক মায়াময় অনুভূতি, এটিই শেকড়। ওরা এই অনুভূতিটুকু নিয়েই থাকুক শেষ নিঃশ্বাস অবধি।

অস্থিমজ্জা কাঁপিয়ে, জাঁকিয়ে শীত নেমেছে আজ এই শহরে। বারান্দায় দাঁড়ালে সামনে সবুজ লন। উপরে বিশাল আকাশের ক্যানভাসে নীলের উপর খণ্ড খণ্ড ছাইরঙা মেঘ ভেসে বেড়ায়। সেইসব দেখতে দেখতে কিছু স্মৃতি ভেসে উঠে মনের গহীন কোণে। একটা গাঢ় দীর্ঘশ্বাস নামে বুকের ভেতর। আমার চাচাকে খুব মনে পড়ছে, অকারণে। গ্রাম থেকে নারিকেল, তালের রস, খেজুরের রস নিয়ে মাঝে মাঝেই চাচা আসতেন আমাদের শহরের বাড়িতে।

ভালো থাকুন সকলে....

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি প্রতিদিন/১৪ ডিসেম্বর ২০১৭/ওয়াসিফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর