১৭ আগস্ট, ২০১৮ ১০:১৭

'জাতির পিতাদের মৃত্যু নেই'

বজলুল কবির ভূঞা

'জাতির পিতাদের মৃত্যু নেই'

বজলুল কবির ভূঞা

বঙ্গবন্ধুকে যখন সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় তখন আমি সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। নরসিংদীর শিবপুরের গ্রামের বাড়ির উঠানে আমার চাচা দাদারা সবাই রেডিওতে বার বার ঘোষণা শুনছিলেন ঘাতকদের। সবার চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। কী হবে দেশের। আমাদের স্বাধীনতা থাকবে কি না এসব নিয়ে ভীত হলেন সবাই। আমি তখন কতটুকুই বা বুঝি? আব্বা তখন ঢাকায় চাকরি করেন। ফোন করে খবর নেওয়ার উপায় ছিল না।

আমাদের বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ছিল। ৬ মাস বাড়ির সবাই ৩০/৩৫ জন যোদ্ধার খাবার দিয়েছে প্রতিদিন। সে কারণে সবাই আরও চিন্তিত হয়ে পড়লেন। আমি চাচা দাদাদের কথা শুনতাম আর ভাবতাম ভয়ংকর কিছু হয়ত ঘটেছে। সবাই চুপচাপ। শংকিত। ভয়ংকর নিস্তব্ধতা চারিদিকে।

জীবন চাকা ঘুরতে ঘুরতে অনেক বছর পার করে এসে মনে হচ্ছে বঙ্গবন্ধু তথা জাতির পিতাদের কখনও মৃত্যু হয় না। পৃথিবীর বহু দেশের জাতির পিতাকে ঘাতকরা হত্যা করেছে। কিন্তু তাঁরা বেঁচে আছে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে। হত্যাকারীগণ ঘৃনিত হয়ে আছে ইতিহাসের পাতায়।

বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আজ ওনার বয়স হত ৯৮ বছর। কল্পনা করতেও কষ্ট হয় যে, তিনি মাত্র ৫৫ বছর পৃথিবীতে বেঁচে ছিলেন। তিনি এ দেশ স্বাধীন না করলে আমরা কে কি করতাম আজ কে জানে?

পাকিস্তানিরা এক সময় মনে করত পূর্ব পাকিস্থানের অশিক্ষিত মানুষগুলো তাদের জন্য বোঝা...। ৪৭ বছর পর আমরা আজ পাকিস্থানকে মনে করি বিশ্বের জন্য বোঝা... কারণ, তাদের না আছে অর্থনৈতিক উন্নতি, না আছে মানবাধিকার। সারা বিশ্ব পাকিস্তানিদের নিয়ে শঙ্কিত থাকে। আমাদের জীবনযাত্রার মান হানাদারদের থেকে অনেক উন্নত।

বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু জাতিকে বিভক্ত করে দিয়েছে। বাঙালিকে ষড়যন্ত্রকারী বানিয়েছে। এর শেষ কোথায় আমরা জানি না। এখন মনে অনেক কষ্ট লাগে যখন দেখি মিথ্যাচারে ভরে গেছে দেশ। সব খানে ভেজালে ভরে যাচ্ছে। মেধাহীনদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে সব খানে।

লেখক: বিসিএস কর অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক

(লেখকের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর