১০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৪:৩১

কেন পীর মিসবাহ'র পক্ষে ভোট চাই?

সুজাত মনসুর

কেন পীর মিসবাহ'র পক্ষে ভোট চাই?

পীর মিসবাহ

আমার ক্ষুদ্র রাজনৈতিক জীবনে যে গোটা কয়েক পরিবার ও ব্যক্তির প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে তাদের মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান পীর ও তার পরিবার অন্যতম। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে আমরা যখন সুনামগঞ্জ জেলায় ছাত্রলীগ পুনর্গঠন শুরু করি তখন আমি দিরাই উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। ১৯৭৮ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে দিরাই থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ও পরবর্তীতে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই। সেই সময় সংগঠনের কাজে প্রায়ই সুনামগঞ্জ যেতে হতো এবং স্বাভাবিকভাবেই যতদিন অবস্থান করতাম সমুদয় দায়িত্ব মতি ভাই স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করতেন। এভাবেই এক সময় তাদের পরিবারের সদস্য হয়ে গিয়েছিলাম। সেই সময় পীর হাবিব ও মিসবাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র এবং দু'জনেই ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী।

পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে সুনামগঞ্জে ছাত্রলীগের শক্ত ভিত রচনা ও বৃহৎ সংগঠনে পরিণত করার পেছনে মতিউর রহমান পীরের অবদান তা আজও কেউ অতিক্রম করে যেতে পারেনি। একথা বলতে দ্বিধা নেই যে, সেদিন ছাত্রলীগ শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়াতে পেরেছিল বলেই আওয়ামী লীগকেও সংগঠিত করা সহজ হয়েছিল। কিন্তু একটা পর্যায়ে সেই দুর্দিন কাটিয়ে আওয়ামী লীগের যখন সুদিনের সূচনা তখনই অত্যন্ত সুকৌশলে মতিউর রহমান পীরসহ তাদের তিন ভাইকে সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগ থেকে নিশ্চিহ্ন করার প্রয়াস চালানো হয়। কয়েকজন ব্যক্তি ধীরে ধীরে সংগঠনসহ বিভিন্ন পদ পদবী আঁকড়ে থাকতে চাইলেন বা সবকিছু কুক্ষিগত করে নিলেন।

২০১৪ সালের নির্বাচনেও‌ যখন‌ মিসবাহদের বঞ্চনার সম্ভাবনা দেখা দেয় তখন বাধ্য হয়েই রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষার জন্য জাতীয় পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে হয়। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের এবারের কমিটির দিকে তাকালেও কতিপয় ক্ষমতালোভী নেতার অন্যায় অবিচারের চিত্রটি নগ্ন হয়ে ফুটে ওঠে। যে মতিউর রহমান পীরের অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে সুনামগঞ্জে ছাত্রলীগের বিশাল বিস্তৃতি তার স্থান জেলা কমিটিতে হয় না। ছাত্রলীগ করার কারণে যে আমির হোসেন রেজার প্রতিপক্ষের হামলায় অঙ্গহানি ঘটে তাঁকে জেলা কমিটিতে রাখা হয় না। অথচ কোন কোন পরিবারের ২/৩ জন করে জেলা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জাসদ বাসদ করেও জেলা কমিটিতে পদ পদবী বাগিয়ে নেয়।

সুতরাং আমি মনে করি কতিপয় ব্যক্তির ক্ষমতাকেন্দ্রিক ক্ষিদের জ্বালায় শেষ হয়ে যাওয়ার থেকে রক্ষা পাবার এবং রাজনৈতিক অসততা, অবিচার, অনৈতিকতা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়া ছাড়া মিসবাহ'র আর কোন উপায় ছিল না। এছাড়া জাতীয় পার্টি মহাজোটের সবচেয়ে বড় শরিক। ১৯৯৬ থেকেই দলটি আওয়ামী লীগের মিত্র হিসেবে আছে। এবারের নির্বাচনেও জাতীয় পার্টি মহাজোটের অংশীদার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাঙালি জাতির জন্য অস্তিত্বের লড়াই। এবারের নির্বাচনে নির্ধারিত হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারার উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে, না পাকিস্তানি ধারার ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে?

বঙ্গবন্ধু ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সোনার বাংলা গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। জননেত্রী শেখ হাসিনাও ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণ করতে চান। আমরা যারা শর্তহীন মুজিব প্রেমিক তাদের পবিত্র ও নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে নিজ অবস্থান থেকে শেখ হাসিনার প্রার্থীদের বিজয়ী করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা। মনে রাখতে হবে মহাজোটের প্রার্থী মানেই শেখ হাসিনার প্রার্থী। একটি আসনও আগামীতে সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সুতরাং মহাজোটের প্রার্থীদের বিজয়ের কোন বিকল্প নেই।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর