২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ১০:১৩

ওরা মনের আনন্দে খাবার খেলো থানার ডাইনিংয়ে বসে

কাজী ওয়াজেদ

ওরা মনের আনন্দে খাবার খেলো থানার ডাইনিংয়ে বসে

ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

হয়ত ওদের মধ্যে কেউ পুলিশের প্রতি কখনো রুষ্ট হয়েছিল, কখনো পুলিশের প্রতি আক্রমনাত্মক হয়ে ইট পাটকেল ছুড়েছিল। হয়ত কখনো ওরা পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগানও দিয়েছিল।

কিন্তু সেই ওরাই আজ পুলিশের প্রতি কতটা আস্থাশীল! কতটা বিশ্বাসী! কতটা নির্ভার! পুলিশকে কতটা আপন ভাবে!

ওরা গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ওরা যাচ্ছে কক্সবাজার শিক্ষা সফরে। সাথে ওদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমণ্ডলী আছেন।

ওদের ডিনারের সময় হয়েছে। সেজন্য রাতে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় ওদের যাত্রাবিরতি। আশপাশে বেশকিছু হোটেল আছে। সেখানে বসেই খেয়ে নিতে পারতো সবাই। কিন্তু ওরা খুঁজে নিল থানা। যাত্রাবাড়ী থানাতে বসে খাওয়াকে ওরা প্রাধান্য দিল। সবাই মিলে ঢুকে পড়লো থানায়।

ওরা যাত্রাবাড়ী থানার ডাইনিং এ বসেই খাবে। অনুমতি চাইলেন ওদের শ্রদ্ধেয় স্যার। ওদের নিজেদের রান্না করে আনা খিচুড়ি আর ডিম দিয়েই খাবে ওরা। সানন্দে ওদের জন্য দ্রুত ডাইনিং পরিষ্কার করা হল। ঝটপট বসার ব্যবস্থা করা হল। ওরা মনের আনন্দে নিজেদের আনা খাবার খেলো থানার ডাইনিং এ বসে।

স্যারেরাসহ সবাই পুলিশ সদস্যদের সাথে ছবি তুললো মহা আনন্দে। ওদের মনে কোন সংকোচ দেখিনি। ওরা খুব আপন, নিরাপদ, আর বন্ধু ভেবেই অপরিচিত থানাকেই নিরাপদ মনে করে সেখানে বসে নিজেদের মত খেয়ে নিল।

কোনরূপ আপ্যায়ন ছাড়া ওদের এই অতি সামান্য আতিথ্য মনে ধরলো খুব। কারণ, ওদের মনিকোঠায় আমাদের সুন্দর স্থান দেখে মনটা ভরে গেল। ভাবছি সত্যিই ওরা আমাদের কতটা আপন!

মুগ্ধ হলাম ওদের অন্তরের উপলব্ধিতে, মুগ্ধ হলাম ওদের আপন ভাবনাতে, মুগ্ধ হলাম ওদের স্বত:স্ফূর্ততা দেখে। আমাদের ওরা এত আপন মনে করায় সত্যি অভিভূত হলাম। রাতের এই হঠাৎ অতিথিদের জন্য অফুরন্ত ভালবাসা।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

লেখক: ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), যাত্রাবাড়ী থানা, ডিএমপি

বিডি-প্রতিদিন/২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর