আমি খুব মা পাগল ছেলে ছিলাম! মায়ের সাথে রাগ করতাম বেশি আবার মাকেই পাগলের মত ভালোবাসতাম। মা নেই গত ২০১৬ সালের ২২ জুলাই থেকে। বাবাও নেই!
পুলিশের চাকরিতে এসে ভুক্তভোগীদের মাঝে নিজের মা-বাবাকে খুঁজে বেড়াতাম! নিজের মা-বাবার জন্য যা করতাম, তাই করার চেষ্টা করতাম অন্যের মা-বাবার জন্য।
আজ ডেমরা জোন অফিস ত্যাগ করার সময় আমার অফিসার ইনচার্জ, যাত্রাবাড়ী কাঁদলেন, আমি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রেখেছিলাম নিজের উপর। একটুও কাঁদিনি! উপরে নিজ অফিসারদের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার সময় আমার বডিগার্ড ও বয়স্ক ড্রাইভার যখন কাঁদলেন, আমি দুর্বল হওয়া শুরু করলাম!এর কিছুক্ষণ পর এক 'মা' এলেন! হ্যাঁ এক মা তার এক হাতে একটি চকোলেট নিয়ে এসে বললেন, "বাবা আমি এই চকোলেটটি আপনার জন্য আনছি"
আমি চকোলেটটি নিলাম! এরপর তিনি বললেন, "বাবা আমি আপনাকে একটু ছুঁয়ে দেখতে চাই"। আমি হাত বাড়িয়ে দিলাম। এরপর তিনি বললেন, আমি একটু আয়াতুল কুরসী পড়ে আপনাকে ফুঁ দিতে চাই! আমি মাথা এগিয়ে দিলাম, তিনি দোয়া পড়ে ফুঁ দিলেন। আমি আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলাম না! চেপে না রেখে কাঁদলাম!
এতিম তো তাই আবেগ বশে থাকে না।
এ জীবনে কী করেছি, কতটুকু করেছি তা আমি জানি না। আমি মহান আল্লাহর কাছে চির কৃতজ্ঞ যে তিনি আমায় পুলিশ বানিয়েছেন! আজ পুলিশ বলেই অচেনা মায়েরা এসে আমার মায়ের ভূমিকা পালন করে যায়। আমার মায়ের ভালোবাসা পুষিয়ে দিতে চায়। মানুষগুলো অনেক ভালো থাকুক, ভালোবাসায় থাকুক!
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
লেখক: অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন), ওয়ারী
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার