২৭ অক্টোবর, ২০১৬ ১৪:১৮

কালের সাক্ষী কমলারাণীর দিঘি

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

কালের সাক্ষী কমলারাণীর দিঘি

প্রায় ৪০০ বছর পূর্বে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় একটি রাজপরিবারের বসবাস ছিল বলে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়। রাজ পরিবারটির শেষ বংশধর রাজা সুবিদ নারায়ণের কীর্তি সাগর দীঘি বা কমলারানীর দীঘি এখনও কালের সাক্ষী হিসেবে বর্তমান।

সুবিদ নারায়ণের স্ত্রী কমলা রানীর নামেই এই দিঘিটি বেশি পরিচিত। শোনা যায়, প্রজাহিতৈষী রাজা সুবিদ নারায়ন শুষ্ক মৌসুমে জনসাধারণের পানির কষ্ট দূর করার লক্ষ্যে একটি দিঘি নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেন। রাজ্যের ১৫০ বিঘা জমি নিয়ে বিস্তৃত এই দিঘি খনন করা হয় সহস্রাধিক শ্রমিকের ৫/৬ মাসের ঘামে-শ্রমে। তৈরি হয় শান বাঁধানো ঘাট।

কিন্তু রাজার ইচ্ছার পূর্ণতা আসেনি তখনো। কারণ রহস্যজনকভাবে দিঘিতে পানি উঠছিল না। এ নিয়ে রাজপরিবারে হতাশার কমতি ছিলনা। জনশ্রুতি আছে, একদিন রাজা স্বপ্নে আদেশ পান, তার স্ত্রী কমল রাণী দিঘিতে নেমে পূজা করলে পানিতে দিঘিটি টইটম্বুর হয়ে উঠবে। রাজা স্বপ্নের বৃত্তান্ত প্রিয়তমা স্ত্রীকে জানান।

কমলারাণী স্বামীর ইচ্ছেপূরণে পূজা দিতে আগ্রহী হয়ে উঠেন। রাজার আদেশে পূজার ব্যবস্থা করা হয়। শান বাঁধানো ঘাট দিয়ে রাণী দিঘিতে নেমে মন্ত্রপাঠ শেষ করেন। পরে দিঘির বিরান জমিতে প্রণাম জানান। এর পরপরই মাটি ভেদ করে স্পচ্ছ পানির উদগিরণ শুরু হয়। দিঘিতে কোমর সমান পানি হলে রাণী সেই জলে গোসল করেন। এরপরই ঘটে দুর্ঘটনা। মধ্য দিঘি থেকে জলের ঘাটে আসার আগেই অথৈ জলে কমলারাণী ডুবে যান।

ওই বিয়োগান্তক প্রেক্ষাপটে এলাকায় বহুবিধ কল্পকাহিনী ডানা মেলে। এখন রাজা নেই, রাজ্যও নেই। বিলীন হয়ে গেছে রাজ ভিটাও। কিন্তু এখনও সেই দিঘিটি বর্তমান। দিঘির জলে আগে যেমন ঢেউ ছিল এখনও আছে। তবে বদলে গেছে অনেক কিছু। বিশাল এ দিঘিটি রক্ষণাবেক্ষণে কোন উদ্যোগ নেই। রাজার দিঘিটি অনেকে আগেই ব্যক্তি মালিকানায় চলে গেছে।  

 

বিডি প্রতিদিন/২৭ অক্টোবর, ২০১৬/ফারজানা

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর