২৭ নভেম্বর, ২০১৬ ০৯:০৬

১২৬ বছর পেরোলেন ভাষাতাত্ত্বিক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়

অনলাইন ডেস্ক

১২৬ বছর পেরোলেন ভাষাতাত্ত্বিক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়

ফাইল ছবি

ভাষাতাত্ত্বিক, সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের ১২৬তম জন্মদিন। ১৮৯০ সালের ২৬ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার শিবপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মানব সংস্কৃতির সব বিষয়গুলি নিয়ে সারাটা জীবন গবেষণা করে গেছেন তিনি। সুনীতিকুমারের জ্ঞান আর মেধা এতটাই ছিল যে দেশ–‌বিদেশের বোদ্ধাগণ তাকে ‘‌এনসাইক্লোপিডিয়া’‌ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। আর পাণ্ডিত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে ‘‌ভাষাচার্য’‌ উপাধি দেন।

সুনীতিকুমার ১৯০৭ সালে মতিলাল শীল ফ্রি স্কুল থেকে এন্ট্রান্স ও স্কটিস চার্চ কলেজ থেকে ১৯৯০ সালে এফ এ পাস করেন। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯১১ সালে ইংরেজিতে সম্মান–সহ বি এ শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এরপর ১৯১৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এম এ শ্রেণীতেও প্রথম স্থান অর্জন করেন। এরপরই বিদ্যাসাগর কলেজে তিনি ইংরেজির অধ্যাপক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। 

১৯১৪ থেকে ১৯১৯ পর্যন্ত অধ্যাপক ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের। এরপর সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯১৯ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধ্বনিবিজ্ঞানে ডিপ্লোমা লাভ করেন। ১৯২১ সালে ডি লিট ডিগ্রি পান ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘‌অরিজিন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফ বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ’‌।‌ আর এর ওপর পরপর দুটি খণ্ড প্রকাশ পাওয়ার পরই তিনি খ্যাতির শিখরে পৌঁছেছিলেন। 

লন্ডনে থাকাকালে সুনীতিকুমার ধ্বনিতত্ত্ব ও ইন্দো–‌ইউরোপীয় ভাষাতত্ত্ব ছাড়াও ফারসি, প্রাচীন আইরিশ, পুরনো ইংরেজি ও গথিক ইত্যাদি ভাষায় ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। ১৯২২ সালে দেশে ফিরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ৩০ বছর কর্মরত থাকার পর এমেরিটাস প্রোফেসর পদে পুনর্নিয়োগ লাভ করেন। 

১৯৬৩ সালে ভারতের জাতীয় অধ্যাপক হন। তার উল্লেখযোগ্য বই হল— বেঙ্গলি ফোনেটিক রিডার, বাংলা ভাষাতত্ত্বের ভূমিকা, ভারতের ভাষা ও ভাষা সমস্যা, সরল ভাষা প্রকাশ বাংলা ব্যাকরণ, ভারত সংস্কৃতি, সংস্কৃতি কী, ওয়ার্ল্ড লিটারেচার অ্যান্ড টেগোর ইত্যাদি। সারা জীবন ধরে তিনি তিন কোটির বেশি গ্রন্থ লিখেছেন।

বহু ভাষাবিদ, পণ্ডিত সুনীতিকুমার দেশে ও বিদেশে বহু সম্মাননা ও পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৬৩ সালে ভারত সরকার তাকে ‘‌পদ্মভূষণ’‌ উপাধি দেয়। ১৯৫২–’‌‌৬৮ পর্যন্ত বিধান পরিষদের অধ্যক্ষ ছিলেন সুনীতিকুমার। জাতীয় অধ্যাপকের সম্মান লাভ করার পাশাপাশি ১৯৬৯ সালে সাহিত্য একাডেমির সভাপতিও নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর বাংলা সাহিত্যে সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সবচেয়ে বড় অবদান হল চণ্ডীদাসের পদাবলীর প্রামাণ্য সংস্করণ সঙ্কলন এবং সম্পাদনা, যা আজও সাহিত্য মহলে যথেষ্ট সমাদৃত।

সূত্র: আজকাল


বিডি প্রতিদিন/২৭ নভেম্বর ২০১৬/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর