২৬ নভেম্বর, ২০১৭ ১৭:৩৩

বর পেটানো থেকে মলত্যাগে বাধা, বিয়ের যত অদ্ভুত আচার-অনুষ্ঠান

অনলাইন ডেস্ক

বর পেটানো থেকে মলত্যাগে বাধা, বিয়ের যত অদ্ভুত আচার-অনুষ্ঠান

এক কথাতেই যেমন বিয়ে পাকা হয় না, তেমনই বিয়ের সঙ্গে জুড়ে থাকে হরেক আচার অনুষ্ঠান। আশীর্বাদ বা পাকা দেখার পরে জল সইতে যাওয়া, গায়ে হলুদের সময় শিলে পদাঘাত, জামাইবরণের সময় শাশুড়ির তার নাক-কান মুলে দেওয়া, জামাইয়ের জুতা চুরি- আচারের সংখ্যা সীমাহীন!

এ তো ছিল বাঙালি ও হিন্দু বিয়ের আচার অনুষ্ঠানের কথা। যার অনেকটাই জুড়ে রয়েছে নিখাদ আনন্দ। অগ্রহায়ণ মাস আসার সঙ্গে সঙ্গে এই সব আচার নিয়ে ব্যস্ত অনেক পরিবারই। কিন্তু জানেন কি, পৃথিবীর নানা দেশে এমন সব বিয়ের আচার রয়েছে যার কথা শুনলে চোখ কপালে উঠবে? বিয়ের মৌসুমে এবার এক এক করে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক সে সবে!

যত কান্না, তত সুখের ঘরকন্না


এ নিখাদ চিনা রেওয়াজ। কিছু দিন আগে থেকে বিয়ের দিন পর্যন্ত হবু কনে কেবলই মুখ ঢেকে কান্নাকাটি করবে। বাপের বাড়ি ছেড়ে যেতে তার কত কষ্ট হচ্ছে, সেটা বোঝানোর জন্যই এই রেওয়াজ। তবে কনে একা নয়, এই কান্নায় যোগ দেন তাঁর মা, ঠাকুমারাও। এখন এই প্রথা চীনে অনেকটাই অবলুপ্ত হয়ে এলেও তুজিয়া গোষ্ঠীর মধ্যে তা বেঁচে রয়েছে বহাল তবিয়তেই!

গায়ে ঝুল


নবদম্পতির মঙ্গল কামনায় এবং তাদের রূপ খোলতাই করার জন্য গায়ে হলুদের প্রথা সবারই জানা। কিন্তু স্কটল্যান্ডের বেশ কিছু জায়গায় বিয়ের আগের দিন বর-কনের সারা গায়ে মাখিয়ে দেওয়া হয় ঝুল, ময়দা আর চিনির রসের মিশ্রণ। উদ্দেশ্য একটাই- কুনজর থেকে তাদের দূরে রাখা!

থু‌-থু


কেনিয়ার মাসাই উপজাতিদের মধ্যে প্রথাই রয়েছে মুখে থুতু মাখিয়ে আপন করে নেওয়ার! বিয়ের পরে কনে যখন শ্বশুরবাড়িতে যাবে, তখন এই প্রথা পালন করা হয় আরও নিষ্ঠার সঙ্গে। কনের বাবা মেয়ের মুখে আর বুকে থুতু ফেলে তাকে অপদেবতার নজর থেকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করেন। এছাড়া শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে কনের পিছন ফিরে দেখাও বারণ! মাসাইদের বিশ্বাস, এমনটা করলেই পাথর হয়ে যাবে সে!

বাসন ভাঙুক, হৃদয় নয়


এ প্রথা জার্মানির। বিয়ের ঠিক আগের রাতে বর-কনের বাড়ির সামনে জমায়েত হন আত্মীয়-স্বজনরা। তারপর চলে একের পর এক চিনেমাটির বাসন আছড়ে ভাঙার পালা! বিশ্বাস, বাসন যত টুকরো হবে, ততই সুখে ভরে উঠবে নবদম্পতির জীবন। সংসারে ঝগড়া হবে না। পাশাপাশি, তারা নিরাপদে থাকবে দুর্ভাগ্য থেকেও।

ফুলশয্যায় ব্যাঘাত


ফরাসি চুমু নাকি তুলনাহীন! তেমনটাই বিশ্বাস সারা পৃথিবীর। কিন্তু ফুলশয্যার রাতে যখন বর-কনে যখন পরস্পরকে চুমুতে-আদরে ভরিয়ে তুলতে যাবেন, ঠিক তখনই জোরে জোরে নানা বাসন, ড্রাম, শিঙা বাজাতে শুরু করেন শুভার্থীরা। এরপর ফুলশয্যায় ক্ষান্ত দিয়ে বর-কনেকে তাদের আপ্যায়ণ করতে হয় খাদ্য বা পানীয় দিয়ে। লোকবিশ্বাস ওই বাজনার চোটেই বিরক্ত হয়ে পালিয়ে যায় শয়তান, যে কিনা দুর্ভাগ্য ডেকে আনবে বলে ওত পেতে থাকে ফুলশয্যার রাতে!

পদাঘাতেই মঙ্গল


উঁহু! বরকে পদাঘাত নয়! বরং বরের পা বেঁধে, সেখানে একটা শুকনো মাছ বা আখ দিয়ে আঘাত করাটাই কোরিয়ার প্রথা। তাতে নাকি আরও বেশি করে ফুলশয্যার জন্য সমর্থ হয়ে ওঠে পুরুষটি!

মানুষ যখন পাপোশ
ফরাসি পলিনেশিনার মারকুয়েসাস দ্বীপে বিয়ের দিন আত্মীয়রা পর পর মাটিতে শুয়ে পড়েন উপুড় হয়ে। আর তাদের পাপোশের মতো ব্যবহার করে উপর দিয়ে হেঁটে যায় বর-কনে।

মলত্যাগে বাধা


ইন্দোনেশিয়ার তিডং প্রজাতি বিয়ের আচারে হার মানায় সবাইকে। সেখানে বিয়ের পরে তিন দিন নবদম্পতির বাথরুমে যাওয়া বারণ। এই নির্দিষ্ট সময়ে মলমূত্রের সঙ্গে সঙ্গে নাকি সৌভাগ্যও ত্যাগ হয়, এমনটাই এখানকার লোকবিশ্বাস। ফলে এই কয়েক দিন বর-কনেকে রাখা হয় প্রায় না খাইয়েই!

কনে বদল


রাশিয়ার বিয়ের আগের রাতে বরকে হাজিরা দিতে হয় শ্বশুরবাড়িতে। সেই সঙ্গে দিতে হয় মোটা অঙ্কের কনেপণ। অন্যথায় বদলে যায় কনে, তার জায়গায় বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয় বৃহন্নলাদের সঙ্গে!

হাসিতে হাসিও না


যা দেখা যাচ্ছে, কঙ্গোতে বিয়ে অত্যন্ত গুরুগম্ভীর ব্যাপার! কেন না, সেখানে বিয়ের দিন বর-কনের হাসা বারণ! হাসলেই তারা ডেকে আনবে অমঙ্গল- এমনটাই বিশ্বাস!

কনে-হরণ


রোমানিয়ায় বিয়ের আগের রাতে কনেকে হরণ করে এক জায়গায় লুকিয়ে রাখেন বন্ধুবান্ধবরা। বরকে তাকে ছাড়াতে হয় কিছু উপহার দিয়ে।

তিনটি তীরে বিদ্ধ করে


চীনের ইয়ুগুর সংস্কৃতিতে বর তিনটি ভোঁতা বাণ ছোড়েন কনের দিকে। তারপর কনের পোশাকে লেগে থাকা সেই সব বাণ খুলে নিয়ে ভেঙে ফেলেন! এ ভাবেই প্রশস্ত হয় নবদম্পতির সুখের পথ।

বিডি প্রতিদিন/২৬ নভেম্বর ২০১৭/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর