৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৯:১৪

নাটোরে লাউ চাষে ভাগ্য বদল

নাসিম উদ্দীন নাসিম, নাটোর:

নাটোরে লাউ চাষে ভাগ্য বদল

নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার গ্রামের আনাচে-কানাচে সর্বত্রই লাউয়ের ছড়াছড়ি। মাঠের পর মাঠ জুড়ে, বাড়ির উঠোনে, ঘরের চালায়, বড় বড় গাছে গাছে, রাস্তার দুই পাশে, এমনকি ঘরের সামনের ফাঁকা জায়গাগুলোতেও মাচায় মাচায় দুলছে লাউ আর লাউ।গাছের প্রতিটি কচি ডগায় লাউ আর সবুজ পাতার সমাহারে দুলছে কৃষকের স্বপ্নও।

সরেজমিনে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার প্রত্যন্ত নশরতপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, লাউকে ঘিরে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত  চলছে বিশাল কৃষি কর্মযজ্ঞ। নারী-পুরুষ ও শিশুরা মাঠ জুড়ে ক্ষেত থেকে লাউ ওঠাতে ব্যস্ত ।  কেউ লাউ কাটছেন, কেউ ভ্যানগাড়িতে সাজাচ্ছেন। রোদ ওঠার আগেই নিয়ে যাচ্ছেন আড়তে।
 
মোট ৬০ বিঘা জমিতে লাউয়ের আবাদে গ্রামটির শতাধিক চাষির ভাগ্য বদলে গেছে, হয়েছেন স্বাবলম্বী। তাদের সন্তানদের লেখাপড়া ও সংসারের সমস্ত খরচ চলে লাউ বিক্রি করে।

চাষিরা জানান, কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের পরিবর্তে সেক্স ফেরোমন ও প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করছেন তারা। এতে বিষমুক্ত হওয়ায় বাজারে তাদের লাউয়ের চাহিদাও বাড়ছে।বছরে এ গ্রামে লাউ উৎপাদিত হচ্ছে কোটি টাকার, প্রতিদিন বিভিন্ন কাঁচাবাজার ও আড়তে যাচ্ছে অন্ততঃ ৩ হাজার পিস করে। ফলে গতি পেয়েছে অর্থনীতির চাকাও।

কৃষকেরা আরও জানান, আগে যেসব জমিতে আখ ও কলা উৎপাদিত হতো, এখন সেখানে বাণিজ্যিকভাবে লাউয়ের চাষ হচ্ছে। কারণ, অল্প জমিতে আখ-কলার তুলনায় লাউয়ের আবাদ লাভজনক। লাউই তাই এখন এ গ্রামের প্রধান অর্থকরী ফসল।
 
কৃষি বিভাগ জানায়, সাধারণত আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি বা শেষদিকে লাউয়ের চারা রোপণ করতে হয়, ৫০/৬০ দিনের মাথায় উত্তোলন করা যায়। উন্নতজাতের বীজ রোপণ আর নিয়মিত গাছের পরিচর্যা করলে ভালো ফলন হয়।

উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইদুর রহমান জানান, ২০১০ সালে কৃষক আব্দুর রাজ্জাক প্রথমে ২৫ শতক জমিতে লাউ চাষ করে সফল হন। তাকে দেখে আরো অনেকেই শুরু  করেন। ভালো ফলন হওয়ায় পরে আস্তে আস্তে  এর বিস্তৃতি ঘটে।

সাইফুল ইসলাম জানান, পাঁচ বছর ধরে লাউয়ের চাষ করছেন তিনি। বিঘাপ্রতি জমিতে আবাদে ২০/২২ হাজার টাকা খরচ হয়। এক বিঘা জমি থেকে এ পর্যন্ত পাওয়া লাউ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বিডিপ্রতিদিন/ ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭/ ই জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর