আবহমান বাঙালি জাতির ঐতিহ্য ও শতবর্ষের প্রাচীন সংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ নৌকাবাইচ। নদীমাতৃক বাংলাদেশের গ্রামীণ লোক সংস্কৃতির সেই ঐতিহ্যকে বুকে ধারণ করে গাইবান্ধা ফুলছড়ির ব্রহ্মপুত্র নদে শেষ হয়েছে দু‘দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার বালাশী যুব সমাজের আয়োজনে বালাশী ঘাটের ব্রহ্মপুত্র নদীতে দু'দিনব্যাপী এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার শুরু হয় এই নৌকাবাইচ।
এতে অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান অধিকার করেন যমুনা এক্সপ্রেস বগুড়া, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন শেরে বাংলা জামালপুর, তৃতীয় স্থান অধিকার করেন চাঁদের আলো কুড়িগ্রাম নামের নৌকা দল।
গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিযোগিতার উপভোগ করার জন্য দূরদূরান্ত থেকে হাজারো নারী-পুরুষ ও শিশু কিশোরসহ সর্বস্তরের লোকজন ভিড় করেছেন। এছাড়া নৌকা খেলাকে ঘিরে বসেছে হরেক রকমের অস্থায়ী দোকান। এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন উপজেলার ছোট-বড় মিলে ৯টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। প্রথম পুরস্কার হিসাবে একটি মোটরসাইকেল, দ্বিতীয় পুরস্কার একটি ফ্রিজ, তৃতীয় পুরস্কার একটি ৩২” এলইডি টিভি ও চতুর্থ পুরষ্কার একটি ২৪” এলইডি টিভি তুলে দেন আয়োজকরা।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ফুলছড়ি উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি সাদেকুল ইসলাম নান্নু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গাইবান্ধা জেলা বিএনপি’র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক শফিউল করিম দোলন, ফুলছড়ি উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম সোলায়মান হোসেন শহীদ, উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সদস্য সচিব ওহিদুল ইসলাম জয়, কঞ্চিপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আশরাফুল ইসলাম বিদ্যুৎ, সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান ডিপটি, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আসিফ সাজ্জাদ ছোটনসহ অনান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
নৌকাবাইচ দেখতে আসা জাহিদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৭ বছর পর নৌকা খেলা দেখতে পেলাম। হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে এ খেলা দেখার মজাই আলাদা। আমি চাই প্রতি বছর এই নৌকা খেলা চালু হোক। গ্রাম বাংলার অতীত ঐতিহ্য আবার ফিরে আসুক।
গাইবান্ধা সদর থেকে আসা সাদিয়া সুলতানা বলেন, আমি আমার পরিবারের সবাই মিলে এ খেলা দেখতে এসেছি। খুব আনন্দময় একটা সময় কাটলো।
এসময় আয়োজক কমিটির সভাপতি মফিজুল হক রনি বলেন, গ্রাম বাংলার অতীত ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও স্থানীয় লোকজনমিলে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। এ খেলাটিতে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খেলার সার্বিক সহযোগিতা করেছি এবং সুষ্ঠুভাবে নৌকাবাইচ শেষ করতে পেরেছি। হাজার হাজার দর্শক এ খেলা উপভোগ করেছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল