বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা
শেখ হাসিনার প্রতি খালেদা জিয়া

আসুন, ভেদাভেদ ভুলে আলোচনায় বসি

আসুন, ভেদাভেদ ভুলে আলোচনায় বসি

সংকট নিরসনে আবারও সংলাপে বসার আহবান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, দেশে এখন দুঃসময় চলছে। এ থেকে উত্তরণে রাজনৈতিক দলসহ সবার প্রতি আহবান করব, আসুন সবকিছু ভুলে গিয়ে এ দেশকে বিপদের হাত থেকে রক্ষার জন্য ঈদের পর ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি। আমরা আর কোনো বিভেদ নয়, ঐক্যের রাজনীতি গড়ে তুলি। সরকারকে বলব, আসুন, আলোচনা করে নির্দলীয় সরকার ফিরিয়ে আনুন। ওই নির্বাচনে আপনারা জিতলে আমরা স্বাগত জানাব।
গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের যৌথ উদ্যোগে এক ইফতার মাহফিল-পূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিরোধীদলীয় নেতা সরকারের প্রতি এই আহবান জানান। বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ইফতার-পূর্ব আলোচনায় শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের মহাসচিব শওকত মাহমুদ। ইফতারের আগে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। নির্দলীয় সরকারের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরে বেগম জিয়া বলেন, ভোলা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপনির্বাচনে ভোট কারচুপি ও সন্ত্রাস হয়েছে। সর্বশেষ কিশোরগঞ্জেও একই কাজ তারা করেছে। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, হবে না। আপনারা অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন। সেই দাবি আমরা মেনে নিয়েছিলাম। এখন আমাদের দাবি মেনে নিয়ে নির্দলীয় সরকার ফিরিয়ে আনুন। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বর্তমান সরকারের আমলে সব অপকর্মের বিচার করার অঙ্গীকার করেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য একটা নীলনকশার ষড়যন্ত্র করছে। পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের পর তারা বুঝে গেছে, সরকার আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাই তারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চায়। তাই ঈদের পর সবাইকে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। খালেদা জিয়া বলেন, এই সরকারের আমলে ১৮ জন সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার এখনো কোনো বিচার হয়নি। সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করার জন্য সাগর-রুনিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। কোনো জিনিসপত্র চুরি হয়নি। কেবল ল্যাপটপটা নিয়ে গেছে। কারণ ওই ল্যাপটপটিতে সরকারের দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ ছিল। আমার দেশ পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ, চ্যানেল দিগন্ত টিভি ও ইসলামিক টিভির সম্প্রচার বন্ধের কঠোর সমালোচনা করে অবিলম্বে এসব প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানান বিরোধীদলীয় নেতা। তিনি বলেন, সত্য সংবাদ প্রকাশের জন্য আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে সরকার অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে নির্যাতন করছে। মঞ্চে বেগম জিয়ার সঙ্গে রুহুল আমিন গাজী, শওকত মাহমুদ ছাড়াও সম্পাদক মাহবুবুল আলম, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, আবুল আসাদ, এ এম এম বাহাউদ্দিন, আলমগীর মহিউদ্দিন, আমানুল্লাহ কবির, ডিইউজে সভাপতি আবদুস শহিদ, সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ একই টেবিলে বসে ইফতার করেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সমর্থিত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শাহেদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান অংশ নেন। মূল টেবিলে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, মওদুদ আহমদ, আ স ম হান্নান শাহ, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সাদেক হোসেন খোকা, খন্দকার মাহবুব হোসেন, মাহমুদুর রহমান মান্না, বরকত উল্লাহ বুলু, অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, আবদুল কাদের, খন্দকার লুৎফর রহমান, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, নুরী আরা সাফা, শিরিন সুলতানা প্রমুখ ইফতারে অংশ নেন।

সর্বশেষ খবর