রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

দণ্ড বিধি প্রয়োগ না হলে এমপিদের অপকর্ম বাড়বে

শামসুল হুদা

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ড. এ টি এম শামসুল হুদা বলেছেন, প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার দণ্ডনীয় অপরাধ কিন্তু বিধির তোয়াক্তা করেন না এমপিরা। ফলে প্রশাসনের সামনেই অনেক বেআইনি কাজ করেন। আবার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের দলীয়করণ হওয়ায় মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে তারা কোনো ব্যবস্থা নেন না।

জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে গতকাল 'সংসদ সদস্যদের আচরণবিধি আইনের প্রয়োজনীয়তা' শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) যৌথভাবে এ গোলটেবিলের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এ টি এম শামসুল হুদা। এ টি এম শামসুল হুদা আরও বলেন, সংবিধানের দণ্ড বিধির সঠিক প্রয়োগ না থাকায় সংসদ সদস্যরা অবাধে সংবিধান লঙ্ঘন করে বিভিন্ন অপকর্ম করছেন। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন- এ নীতি বাস্তবায়ন না হলে গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব। তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে সংবিধানের যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। এর জন্য স্পিকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি চাইলে সংসদ সদস্যদের সদস্য পদ বাতিল করতে পারেন। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, কোনো সংসদ সদস্য অসদাচরণ করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা রয়েছে জাতীয় সংসদের স্পিকারের। কিন্তু কোনো সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধেই এখন পর্যন্ত স্পিকারকে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। তাহলে নতুন আচরণ বিধি আইনেরও প্রয়োজন হতো না। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সংসদ সদস্যরা ব্যবসায় জড়িত এটা উদ্বেগের বিষয়। তিনি জানান, স্বাধীনতার পর সংসদে তাদের হার ছিল ১৮ শতাংশ, এখন ৬০ শতাংশই ব্যবসায়ী। আলোচনায় মো. শহিদুজ্জামান সরকার বলেন, সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ১৯৭২ সালে ৩৫ জন এমপিকে দুর্নীতির অভিযোগে গণপরিষদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। পঞ্চম ও বর্তমান সংসদের একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হলেও শেষ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ২০০৯ সালে ১৮ জন এমপি মিথ্যা হলফনামা দিয়ে সরকারি প্লটের বরাদ্দ নিয়েছেন। বিচারপতি কাজী এবাদুল হক বলেন, আইন করেও কিছু হবে না। কারণ প্রস্তাবিত আইনে শাস্তির বিধান নেই। জানা যায়, সাবের হোসেন চৌধুরী 'সংসদ সদস্য আচরণ আইন ২০১০' নামে একটি বেসরকারি বিল সংসদে উত্থাপন করেছিলেন। এতে এমপিদের নৈতিক অবস্থান, স্বার্থগত দ্বন্দ্ব ও আর্থিক তথ্য, সরকারি সম্পদের ব্যবহার, আইন লঙ্ঘনের শাস্তি ইত্যাদি ১৫টি বিষয় সনি্নবেশিত হয়েছে। বক্তারা সাবের হোসেন চৌধুরী এমপির আনা বিলটি সংসদের আসন্ন অধিবেশনে পাস করার জোর দাবি জানান। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সি এম শফি সামি, সাবেক মন্ত্রী সরদার আমজাদ হোসেন, সাবেক এমপি হুমায়ুন কবির হিরু, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মো. জাহাঙ্গীর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 

 

সর্বশেষ খবর