বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

যে কারণে বন্ধ হচ্ছে না ইয়াবার প্রবেশ

যে কারণে বন্ধ হচ্ছে না ইয়াবার প্রবেশ

ভয়ঙ্কর মাদক ইয়াবা নিয়ন্ত্রণে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ব্যর্থ হচ্ছে। এ ব্যর্থতার দায় নিজেরা না নিয়ে একে অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়ায় পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ইয়াবার চালান মিয়ানমার-টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে। পরে তা কঙ্বাজার হয়ে দ্রুত ছড়িয়ে যাচ্ছে দেশের শহর-বন্দর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে।

বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, ইয়াবা উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মিয়ানমার। মাদক ব্যবসায়ীরা সীমান্ত পথে ইয়াবা বাংলাদেশে নিয়ে আসছে। শুধু বাংলাদেশে পাচারের জন্যই মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে ৩৮টি ইয়াবা কারখানা। এসব কারখানা থেকে প্রতিদিন ৩০ লাখেরও বেশি ইয়াবা টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ির দুর্গম সীমান্তের ৪৩টি পয়েন্ট দিয়ে আসছে। গোয়েন্দা সংস্থা ও স্থানীয় অভিবাসীদের কাছ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমারের মংডু থেকে বিভিন্ন ফিশিং বোটের মাধ্যমে টেকনাফের স্থলবন্দর, শাহপরীর দ্বীপ, মাঝিরপাড়া, জালিয়াপাড়া, ট্রানজিট ঘাট, নাইট্যংপাড়া, সাবরাংয়ের লেজিপাড়া ও বার্মাপাড়া পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিনই দেশে লাখ লাখ পিস ইয়াবা আসছে। বিভিন্ন সংস্থার একশ্রেণীর কর্মকর্তার সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সখ্য ও গোপন লেনদেন থাকায় ইয়াবা প্রবেশ রোধ হচ্ছে না কোনোভাবেই। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি যদি ঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করত তাহলে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ইয়াবার কোনো চালান বাংলাদেশে ঢুকতে পারত না। র্যাবের এক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চরমপন্থি, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের মতো বেশ কিছু কাজ নিয়মিত করতে হয় র্যাবকে। এর মধ্যেও মাদকের অপব্যবহার রোধে অভিযান চলানো হচ্ছে। বিজিবি যদি আন্তরিক হয় তাহলে ইয়াবা কিংবা ফেনসিডিলের মতো মাদক দেশে ঢুকতে পারবে না। পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদকের অবৈধ ব্যবসা বন্ধের জন্য দেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর নামে একটি প্রতিষ্ঠান আছে। এ প্রতিষ্ঠানটির একমাত্র কাজ হচ্ছে মাদকের চোরাচালান ও অপব্যবহার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া; কিন্তু তারা শুরু থেকেই এ বিষয়ে আন্তরিক নয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, 'চাহিদা থাকলে জোগান কোনো না কোনোভাবে হবেই। এ জন্য ইয়াবার বিরুদ্ধে সর্বাত্দক সামাজিক আন্দোলন আরও জোরদার করতে হবে।' তিনি আরও বলেন, প্রয়োজন অনুযায়ী আমাদের জনবল কিংবা অন্যান্য সাপোর্টের ঘাটতি রয়েছে। তাই আন্তরিকতা থাকলেও প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর পরও আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা করার চেষ্টা করছি।

 

 

সর্বশেষ খবর