শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

যেভাবে যে কারণে আটক

একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমকে কারাগারে পাঠানো হয় ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি। এর আগে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামিনের আবেদন করেন। আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। তবে শুনানি শেষে আদালত আবেদন নাকচ করে দেন। বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ওই সময় ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবির ও বিচারক এ কে এম জহির আহমেদ। ট্রাইব্যুনালের আদেশে গোলাম আযমের স্বাস্থ্যগত বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখারও নির্দেশ দেওয়া হয়। ওইদিন দুপুরে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়ার পর বিকাল ৪টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়। এর আগে সকালে তাকে হুইল চেয়ারে করে আদালতকক্ষে ওঠানো হয়। শুনানি শেষে হুইল চেয়ারে করে তাকে নামানো হয়। পুলিশ, র্যাবসহ বিপুলসংখ্যক নিরাপত্তারক্ষীর কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে গোলাম আযম নিজের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের গাড়িতে চড়ে হাজির হন ট্রাইব্যুনালে। ৯ জানুয়ারি গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের অভিযোগ আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল তাকে ১১ জানুয়ারি আদালতে হাজির করতে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাককে নির্দেশ দেন। আদালত বলেন, ব্যারিস্টার রাজ্জাক গোলাম আযমকে হাজির করতে না পারলে গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয় বিবেচনা করা হবে।

আদালতে উপস্থিত গোলাম আযমের ছেলে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহিল আমান আযমীকে দেখিয়ে ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, তার জিম্মায় জামিন দেওয়া যেতে পারে। তিনি আদালতের নির্দেশনা মতে কোর্টে হাজির হবেন। বাড়ির বাইরে যাবেন না। বাংলাদেশের স্বাধীনতার তীব্র বিরোধিতাকারী গোলাম আযম ১৯৭১ সালে শান্তি কমিটি, রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠনে নেতৃত্ব দেন, যাদের সহযোগিতা নিয়ে পাকিস্তানি সেনারা বাংলাদেশে ব্যাপক হত্যা ও নির্যাতন চালায়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযম সে সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয়ও প্রকাশ্যে তদবির চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। স্বাধীনতার পর সাত বছর লন্ডনে অবস্থান শেষে ১৯৭৮ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে আবার বাংলাদেশে আসেন জামায়াতের এই নেতা। ২০০০ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্ব দেন তিনি।

আটকের পর থেকেই গোলাম আযমের বিচার ত্বরান্বিত এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন সভা-সমাবেশ, প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে প্রচার চালায়। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি বিভিন্ন সময় মানববন্ধন করে। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদও আলাদাভাবে মানববন্ধন করে শীর্ষ এই যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবি জানায়।

সর্বশেষ খবর