শিরোনাম
শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা
হত্যা অপহরণ নির্যাতনের ১৪ অভিযোগ

মীর কাসেমের রায় রবিবার

মীর কাসেমের রায় রবিবার

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করা হবে রবিবার। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গতকাল রায় ঘোষণার এ দিন নির্ধারণ করেন। জামায়াত-শিবিরের অন্যতম অর্থজোগানদাতা হিসেবে পরিচিত এই নেতার বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ ও নির্যাতনের ১৪টি ঘটনায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলাটি ৪ মে থেকে রায়ের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। এটি হবে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের ১১তম মামলার রায়। সর্বশেষ বুধবার একাত্তরে ঘাতক সংগঠন আলবদরের প্রধান ও বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। শুনানিতে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে দাবি করে মীর কাসেমের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছে প্রসিকিউশন। তবে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি দাবি করে তার খালাস চেয়েছে আসামি পক্ষ। গত বছর ৫ সেপ্টেম্বর ১৪টি অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল-১ এ মীর কাসেমের বিচার শুরু হয়। পরে মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-২ এ স্থানান্তর করা হয়। ২০১২ সালের ১৭ জুন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে মীর কাসেম আলীকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে গত বছর ২৬ মে প্রসিকিউশনের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের পক্ষে ২৪ এবং আসামি পক্ষে তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
যত অভিযোগ : ট্রাইব্যুনালের আদেশে মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ গঠন করা হয়। প্রথম অভিযোগে বলা হয়, তার নেতৃত্বে আলবদর বাহিনী ১৯৭১ সালের ৮ নভেম্বর ওমরুল ইসলাম চৌধুরীকে অপহরণ করে। পরে কয়েক দফায় চট্টগ্রামের আন্দর কিল্লায় ডালিম হোটেল, পাঁচলাইশ থানার সালমা মঞ্জিল এবং একটি চামড়ার গুদামে নিয়ে নির্যাতন করা হয় তাকে। দ্বিতীয় অভিযোগ, মীর কাসেমের নেতৃত্বে ১৯ নভেম্বর চাকতাই থেকে লুৎফর রহমান ফারুককে অপহরণ করে ডালিম হোটেলে নিয়ে নির্যাতন করা হয় এবং বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়। তৃতীয় অভিযোগ, ২২ বা ২৩ নভেম্বর মীর কাসেমের নেতৃত্বে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে ডালিম হোটেলে নির্যাতন করা হয়। চতুর্থ অভিযোগ, সালাহউদ্দিন খানকে ধরে নিয়ে ডালিম হোটেলে নির্যাতন করে আলবদর বাহিনী। পঞ্চম অভিযোগ, ২৫ নভেম্বর আনোয়ারা থানার আবদুল জব্বারকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে ডালিম হোটেলে মীর কাসেমের সামনে হাজির করা হয়। সেখানে নির্যাতন করা হয় তাকে। ষষ্ঠ অভিযোগ, চট্টগ্রামের একটি চায়ের দোকান থেকে হারুনুর রশিদকে ধরে নিয়ে ডালিম হোটেল এবং সালমা মঞ্জিলে নির্যাতন করা হয়। সপ্তম অভিযোগ, মীর কাসেমের নেতৃত্বে সাত-আট যুবক ডাবলমুরিং থানা থেকে সানাউল্লাহ চৌধুরীসহ দুজনকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয় ডালিম হোটেলে। অষ্টম অভিযোগ, ২৯ নভেম্বর রাতে অপহরণ করে ডালিম হোটেলে নিয়ে নির্যাতন করা হয় নূরুল কুদ্দুসসহ চারজনকে। নবম অভিযোগ, ২৯ নভেম্বর সৈয়দ মো. এমরানসহ ছয়জনকে অপহরণ ও নির্যাতন। দশম অভিযোগ, মীর কাসেমের নির্দেশে মো. যাকারিয়াসহ চারজনকে অপহরণ ও নির্যাতন। ১১তম অভিযোগ, জসিম উদ্দিনসহ ছয়জনকে অপহরণের পর নির্যাতন। এরপর জসিমসহ পাঁচজনকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়। ১২তম অভিযোগ, অপহরণ করে তিনজনকে নির্যাতন করা হয়। দুজনকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়। ১৩তম অভিযোগ, সুনীল কান্তিকে অপহরণ ও নির্যাতন। ১৪তম অভিযোগ, নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে অপহরণ ও নির্যাতন। মীর কাসেম আলীকে ২০১২ সালের ১৭ জুন গ্রেফতার করা হয়।

সর্বশেষ খবর