সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

জিতেই চট্টগ্রাম মিশন শেষ টাইগারদের

জিতেই চট্টগ্রাম মিশন শেষ টাইগারদের

নিজেদের টেস্ট ক্রিকেটে ইতিহাস গড়ার হাতছানি নিয়ে খুলনা থেকে চট্টগ্রাম এসেছিল টাইগাররা। চট্টগ্রামে শুধু টেস্ট জিতে ক্ষান্ত থাকেনি, রচনা করেছে ইতিহাসও। প্রথমবারের মতো তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে কোনো প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশের তিক্ত স্বাদ দেয় বাংলাদেশ। জয়ে টেস্ট মিশন শেষ হয় মুশফিকবাহিনীর। এ দুর্দান্ত জয়ের পর বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আগে নিজেদের ফিরে পাওয়ার আরও একটি মিশন ছিল টাইগারদের। ওয়ানডে ক্রিকেটে টানা হারের শৃঙ্খল ভেঙে জয়ের ট্র্যাকে ওঠা ছিল সময়ের দাবি। সেই কাজটিই পয়মন্ত চট্টগ্রামে সম্পন্ন করেছেন মাশরাফিরা। নতুন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুর্জার নেতৃত্বে বসুন্ধরা সিমেন্ট ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি জিতে জয়ের রথে চেপে বসে টাইগাররা। এই রথ আর থামেনি। গতকাল সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬৮ রানে জিতে শেষ করেছে চট্টগ্রাম মিশন। ২-০ ব্যবধানের লিড নিয়েই টাইগাররা আজ সন্ধ্যায় ঢাকায় রওনা হবে। বুধবার সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে মিরপুরে। এখানেও থাকছে ইতিহাস গড়ার হাতছানি। যদি ঢাকায় টানা তিন ওয়ানডে জিততে পারেন মাশরাফিরা, তাহলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো ৫-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বাদ পাবে বাংলাদেশ। অপেক্ষা এবার এ জয়েরই। প্রথম ওয়ানডেতে টস জিততে মাশরাফি দোয়া চেয়েছিলেন দেশবাসীর কাছে। জিততে পারেননি। তবে জিতেছিলেন ম্যাচ। কাল টস জিতেছেন। জিতেছেন ম্যাচও। শিশিরে বল ভিজে খেলার অনুপযুক্ত হয়ে পড়তে পারে- এমন অজুহাতে এক ঘণ্টা এগিয়ে আনা হয় ম্যাচ। সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করে দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও তামিম ইকবালের রেকর্ড জুটিতে ৭ উইকেটে ২৫১ রান করে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার উদ্বোধনী জুটিতে ১৫৮ রান করেন ৩৩ ওভারে, যা চট্টগ্রামের মাটিতে টাইগারদের সর্বোচ্চ রানের জুটি। প্রথম উইকেট জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সব দেশের বিপক্ষে প্রথম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি ১৭০ রানের, যা টেস্ট-পূর্ব সময়ের। ১৯৯৯ সালে মেহরাব হোসেন অপি ও শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ এই রান করেছিলেন। ওই ম্যাচে অপি বাংলাদেশের ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছিলেন। কাল ব্যক্তিগত ৭৬ রানে রানআউটের শিকার হওয়ার আগে আরও একটি রেকর্ড গড়েন তামিম। ওয়ানডে ক্রিকেটে তিনি এখন টাইগারদের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৭টি হাফসেঞ্চুরির মালিক। আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয় খেলেন ৮০ রানের ইনিংস। শেষ দিকে মুমিনুল হক ২৩ বলে ৩৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললে আড়াইশর ঘর পেরোয় বাংলাদেশ। কাল এনামুল-তামিমের ১৫৮ রানের জুটিটি ৫০ নম্বর শতরানের জুটি এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৯ নম্বর। উদ্বোধনী জুটিতে শতরানের ওপর স্কোর রয়েছে ৯টি। চারটির প্রতিপক্ষই জিম্বাবুয়ে। ২৫৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে আসে জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের শুরুর ওভারের শেষ বলে দলের সেরা ব্যাটসম্যান হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে বোল্ড করে মাশরাফি খাদের কিনারায় ঠেলে দেন আফ্রিকান প্রতিনিধিদের। শুরুর সেই ধাক্কা আর সামাল দিতে পারেনি চিগুম্বুরাবাহিনী।

যদিও সলোমন মায়ার ৫০ রানের ইনিংস খেলে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু চেষ্টা পর্যন্তই। শুরুতে মাশরাফি এবং শেষে বাঁ-হাতি স্পিনার আরাফাত সানির সাঁড়াশি আক্রমণে ৪৪.৫ ওভারে ১৮৩ রানে শেষ হয়ে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস। প্রথম ম্যাচের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে গতকাল ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন মাশরাফি। সপ্তম ম্যাচ খেলতে নেমে প্রথমবারের মতো ৪ উইকেট নেন আরাফাত। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও বোলিংয়ে ১ উইকেট নিয়ে হতাশার কিছুটা লাঘব করেন সাকিব।

 

 

সর্বশেষ খবর