সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
মানবতাবিরোধী অপরাধ ১৯৭১ : নিজামীর আপিল

মোবারকের রায় আজ

মোবারকের রায় আজ

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা মো. মোবারক হোসেনের মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ। গতকাল বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আদেশ দেওয়ার এ দিন ধার্য করেন। ১২ জুন থেকে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। একাত্তরে গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ ও নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগে মোবারকের বিচার শুরু হয় গত বছরের ২৩ এপ্রিল। মোবারকের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার টানমান্দাইল ও জাঙ্গাইল গ্রামের ৩৩ জনকে গণহত্যার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আনন্দময়ী কালীবাড়ি রাজাকার ক্যাম্পে আশু রঞ্জন দেবকে আটকে রেখে নির্যাতনের পর হত্যা, ছাতিয়ানা গ্রামের শহীদ আবদুল খালেককে অপহরণ করে আটকে রেখে নির্যাতন শেষে হত্যা এবং শ্যামপুর গ্রামের দুজনকে অপহরণ ও আটকে রেখে নির্যাতনের পর একজনকে হত্যা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খরমপুর গ্রামের আবদুল মালেককে অপহরণের পর আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যার সঙ্গেও তিনি জড়িত ছিলেন। একাত্তরের আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার নয়াদিল গ্রামে মোবারকের বাড়ি। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে তিনি স্থানীয় জামায়াতের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। সেখান থেকে বহিষ্কৃত হয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। বহিষ্কৃত হন আওয়ামী লীগ থেকেও। ১৯৭১ সালে আবদুল খালেকের হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তার মেয়ে খোদেজা বেগম ২০০৯ সালের ৩ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় হাইকোর্ট তাকে একই বছরের ১৩ মে আগাম জামিন দেন। এরপর কয়েক দফা তার জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে আত্দসমর্পণ করলে ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর মোবারক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। একই সঙ্গে মামলার নথিপত্র আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ২০১২ সালের ৬ জুন আসামি পক্ষের আইনজীবী আপিল মোকদ্দমা করলে ট্রাইব্যুনাল এ মামলার নথি তলব করেন। ওই বছরের ১৬ জুলাই থেকে মোবারকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়।

নিজামীর আপিল : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় থেকে খালাস চেয়ে আপিল করেছেন। গতকাল সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন দায়ের করা হয়। আপিলে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদিন তুহিন। আবেদনে আসামির সাজা বাতিল ও খালাস চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিজামীর আইনজীবী তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ১৪ খণ্ডের আপিলে মোট পৃষ্ঠাসংখ্যা ছয় হাজার ২৫২। এতে ১৬৮টি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। একাত্তরে ঘাতক সংগঠন আলবদর বাহিনীর প্রধান নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের এই ট্রাইব্যুনাল ২৯ অক্টোবর এ রায় দেন। নিজামীর বিরুদ্ধে গঠন করা ১৬টি অভিযোগের মধ্যে আটটি ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে দ্বিতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ ও ১৬তম অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। প্রথম, তৃতীয়, সপ্তম ও অষ্টম অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া হয়। বাকি আটটি অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সেগুলো থেকে তাকে খালাস দেন ট্রাইব্যুনাল।

 

 

সর্বশেষ খবর