শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

বিএনপির সময় রূপালী ব্যাংক কেনার প্রস্তাব দেন মুসা

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের রূপালী ব্যাংক কিনতে চেয়েছিলেন বিতর্কিত ব্যবসায়ী মূসা বিন শমসের! দরদামও চূড়ান্ত হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার এই শখ পূরণ হয়নি। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এসে ব্যাংক বিক্রির সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেয়। জানা গেছে, রূপালী ব্যাংক বিক্রিকে কেন্দ্র করে ওই সময়ে শেয়ারবাজারে ব্যাপক কারসাজি ঘটে। ব্যাংকটির প্রতিটি শেয়ারের দাম একপর্যায়ে পৌঁছে যায় তিন হাজার টাকার কাছাকাছি।

সূত্র জানায়, ২০০৩ সালে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার রূপালী ব্যাংক বিক্রির উদ্যোগ নেয়। তখন সিদ্ধান্ত হয় ব্যাংকটির ৬৭ দশমিক ২৬ শতাংশ শেয়ার বেসরকারি হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে। এর অংশ হিসাবে ব্যাংকটি নিলামে তোলা হয়। সৌদি যুবরাজ বন্দর বিন মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল সৌদির নামে ব্যাংক কেনার দরপত্রে অংশ নেওয়া হয়, যার তত্ত্বাবধান করেন মূসা বিন শমসের। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে তিনিই নির্বাচিত হন। এরপর দীর্ঘ তিন বছর ব্যাংকটি বিক্রি নিয়ে চলে নানা ধরনের টালবাহানা। সময় সময় ছড়ানো হয় বিভিন্ন ধরনের গুজব। আর এ সুযোগে শেয়ারবাজার থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় সুবিধাভোগীরা। সূত্রগুলো আরও জানায়, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ক্ষমতার শেষ দিকে ব্যাংক বিক্রির বিষয়টি নিয়ে যখন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়, তখন শেষ মুহূর্তে আরও একটি গুজব ছড়িয়ে সর্বস্বান্ত করা হয় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। দেশের প্রথম শ্রেণির একটি পত্রিকা প্রতিবেদনাকারে গুজব ছড়ায়, যেখানে বলা হয়-রূপালী ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ঈদের শুভেচ্ছা হিসেবে খেজুর পাঠিয়েছেন সৌদি যুবরাজ! সেই প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ারের দাম এক লাফে হাজার টাকা বেড়ে যায়। সৌদি যুবরাজের ওই খেজুর পাঠানোর খবর মূসা বিন শমসেরেরই কোনো কারসাজি কিনা তা জানা যায়নি। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে রূপালী ব্যাংক বিক্রিকে কেন্দ্র করে শেয়ার কারসাজির এই ঘটনা নিয়ে কোনো ধরনের তদন্ত কার্যক্রম চালায়নি পরবর্তী সরকারগুলো। ফলে কারসাজির বিষয়টি চাপা পড়ে যায়। সেই সঙ্গে চাপা পড়ে যায় ব্যাংক বিক্রির রহস্যও। সত্যি কি সৌদি যুবরাজ ব্যাংকটি কিনতে চেয়েছিলেন? নাকি যুবরাজের নাম ভাঙিয়ে শেয়ারবাজার থেকে টাকা লুটে নেওয়ার কৌশল সাজিয়েছিলেন মূসা বিন শমসের? এসব প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর