মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

দল না দেখে অপরাধী ধরার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

দল না দেখে অপরাধীদের ধরার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যেভাবেই হোক, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হবে।
গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে রংপুর ও বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার এবং বরগুনা ও লালমনিরহাটের জেলাপ্রশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এই নির্দেশ দেন। স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ছাড়াও পুলিশ, জনপ্রতিনিধি এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের বক্তব্যের পর গত মাসে রংপুরে এক আওয়ামী লীগ নেতা খুন হওয়ার ঘটনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেভাবেই হোক উন্নয়ন করতে হবে। যারাই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদক চোরাচালানে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মানুষ স্বস্তিতে জীবনযাপন করবে এটাই আমরা চাই। তিনি বলেন, অপরাধী কে, কোন দলের তা জানতে চাই না। অপরাধ করলে ধরতে হবে। যে অপরাধী তাকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। যে অপরাধী সে কোন দলের তা না দেখে তাকে ধরতে হবে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে কোনোভাবেই সহ্য করবে না। রংপুরের বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রংপুরের গংগাচড়া দুর্গত এলাকা। ওই এলাকাটি দেখা দরকার। বিশেষ করে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রামের বিভিন্ন এলাকা। এসব দারিদ্র্যপীড়িত পকেটে নজর দিতে হবে বেশি। এক সময় এই এলাকা মঙ্গাপীড়িত এলাকা থাকলেও আমরা ক্ষমতায় এলে সেখানে আর মঙ্গা থাকে না। মঙ্গা দূর ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ হলে আগামীতে আরও বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিকল্পিতভাবে বিভাগকে গড়ে তুলতে হবে। নবগঠিত রংপুর বিভাগের জন্য মাস্টারপ্ল্যান তৈরির নির্দেশ দেন তিনি। বরগুনার জেলা প্রশাসক এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জেলার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করলে শেখ হাসিনা বলেন, বরগুনার উন্নয়নে যা যা করার করব। সেখানে ক্যান্টনমেন্ট, পাওয়ার প্লান্ট, ইন্ডাস্ট্রি হবে।
আইনি লড়াইয়ে পাওয়া গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণে প্রস্তুতির ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী বন্যা, জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুরারোগ্য থেকে রক্ষা পেতে উপকূলে সবুজ বেষ্টনী তৈরির পরামর্শ দেন। বরগুনার রাখাইন বসতি বর্মি গ্রাম উন্নয়নে দৃষ্টি দিতেও বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের কৃষি উৎপাদন আরও বাড়ানোর পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, কৃষি উৎপাদন রাড়লে জেলারও উন্নতি হবে। সেই সঙ্গে প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, এতে আগামী বাজেট পেতে সহজ হবে। বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী বরিশালকে ‘শস্য ভাণ্ডার’ উল্লেখ করে বলেন, আমরা বরিশালের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞার সঞ্চালনায় দীর্ঘ সোয়া ঘণ্টার ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়ন ও উন্নয়নে স্থিতিশীল পরিবেশের জন্য দল না দেখে দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেন।  এদিকে আজ সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তিনি কারা সপ্তাহ উদ্বোধন এবং কারারক্ষীদের দরবারে ভাষণ দেবেন। এ উপলক্ষে কারাগারকে বর্ণিলভাবে সাজানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর