রাজনৈতিক গুপ্তহত্যা ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে (কেপিআই-কি পয়েন্ট ইনস্টালেশন) নাশকতামূলক হামলার আশঙ্কা করছে গোয়েন্দারা। তারা তথ্য পেয়েছে, রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করতে বড় ধরনের ঘটনা ঘটানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা যেমন বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিমানবন্দর, রেলওয়ে স্টেশনকে নাশকতাকারীরা টার্গেট করেছে। পুলিশ, জ্বালানি তেলের ডিপো এবং পেট্রল পাম্পও টার্গেটে রয়েছে। ফলে আজ বিশ্ব ইজতেমা শেষ হওয়ার পর নাশকতাকে আলাদা মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হতে পারে। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, সন্ধ্যার পরপরই দুর্বৃত্তরা আরও বেশি মরিয়া হয়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি হামলা বা হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে পারেন সরকার ও সরকার বিরোধী পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা।
গোয়েন্দা সূত্রের তথ্যানুযায়ী, নাশকতা ঘটানোর জন্য এবার ভাড়াটে খুনি, বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থিদের কাজে লাগানো হতে পারে। ইতিমধ্যেই নাশকতার পরিকল্পনাকারীরা এদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। সম্প্রতি ইজতেমার গাড়িতে করে নাশকতাকারীদের একটি অংশ রাজধানীসহ এর আশপাশের এলাকায় প্রবেশ করেছে। এই ভাড়াটে খুনিরা টার্গেট করা ব্যক্তিদের গতিপথ রেকি করাও শুরু করেছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে সংশ্লিষ্ট পুরো এলাকাকে সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার মতো ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা রয়েছে নাশকতাকারীদের। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এ সময়ই নানান ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হতে পারে। পুলিশ স্টেশন এবং প্রশাসনের বিভিন্ন অফিসে একযোগে হামলার চেষ্টাও হতে পারে। এমনকি মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে গর্ত করে এবং রেললাইনের ফিশপ্লেটও তুলে ফেলার চিন্তা রয়েছে। নাশকতার মূল হোতারা চাইছে, যে কোনো মূল্যেই হোক সারা দেশ থেকে রাজধানীকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊর্ধ্বতন এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, এতদিন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। ইজতেমার পরই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও হার্ডলাইনে যাবে। যা-যা করা প্রয়োজন, ঠিক তাই করা হবে। কোনো ধরনের সহিংসতা বরদাস্ত করা হবে না। সূত্র জানায়, গোয়েন্দাদের আশঙ্কাজনক তথ্যের পর পুলিশ ও গোয়েন্দারাও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সহিংসতাকারী কিংবা নাশকতার চেষ্টাকারী যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে সম্প্রতি পুলিশ প্রধান, বিজিবি প্রধান এবং র্যাবের প্রধান যে বক্তব্য দিয়েছেন তা আমারও বক্তব্য।