বুধবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

ষড়যন্ত্র দেখছে বিএনপি

ষড়যন্ত্র দেখছে বিএনপি

চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থায় হঠাৎ করেই ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের উদ্যোগকে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছে বিএনপি। দলের নীতিনির্ধাকরদের মতে, ধাপে ধাপে আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে যাওয়ার আগমুহূর্তে দীর্ঘদিন আগে মেয়াদোত্তীর্ণ সিটি নির্বাচনের টোপ ফেলা হচ্ছে। উদ্দেশ্য- বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের আন্দোলন ‘নস্যাৎ’ করা। কিন্তু বিএনপি সরকারের এ টোপে পা দেবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী আন্দোলনের কৌশল পাল্টে নাগরিক সমাজের ব্যানারে নির্বাচনে অংশও নিতে পারে বিএনপি। দলীয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমান (অব.) বলেন, ‘দেশ আজ গভীর সংকটে। গণতন্ত্র অনুপস্থিত। প্রতিদিন গুম-খুন, পেট্রলবোমার আঘাতে মানুষ মারা যাচ্ছে। দেশের প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ চাচ্ছে এ মুহূর্তে একটি সংলাপ-সমঝোতার ভিত্তিতে নতুন করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা। কিন্তু সরকার জনগণের সেই দাবির প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে হঠাৎ করে ডিসিসি নির্বাচন দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে। এটা ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ হিসেবে আমি মনে করি।’ বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, সরকার গত বছরের ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনের মতো ২০ দলকে বাইরে রেখেই নির্বাচন করার চিন্তাভাবনা করছে। ঘরছাড়া ও হামলা-মামলায় জর্জরিত বিএনপি নির্বাচনের কোনো প্রস্তুতিও নিতে পারবে না বলে ক্ষমতাসীনদের ধারণা। কিন্তু বিএনপি সরকারের সেই ফাঁদে পা দেবে না। চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি পরিস্থিতি বিবেচনায় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেবে। সরকারকে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে নাগরিক কমিটির ব্যানারে ভিন্ন প্লাটফরম থেকে যে কোনো ব্যক্তিকে বিএনপি জোট সমর্থন দেবে। ঢাকার নগরপিতার দায়িত্ব কোনোভাবেই আওয়ামী লীগকে দেওয়া যাবে না বলে মনে করেন বিএনপি নেতারা। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা মনে করেন, জাতীয় সংসদ আর স্থানীয় সরকার নির্বাচন এক নয়। বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও বিএনপি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তবে এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। চলমান রাজনৈতিক সংকটে নতুন করে জাতীয় নির্বাচনকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নেতারা আশা করছেন, চলতি মাসের মধ্যেই চলমান সংকটের একটি সমাধান হতে পারে। আর তা হলে ডিসিসি নির্বাচন নিয়ে পরে চিন্তাভাবনা করা যাবে বলেও মনে করেন তারা। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, যেখানে সরকার বিএনপিকে সভা-সমাবেশই করতে দিচ্ছে না, আন্দোলনে কোথাও দাঁড়াতেই দিচ্ছে না- সেই মুহূর্তে ঢাকা সিটি নির্বাচনের চিন্তার অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকাই স্বাভাবিক। সরকার হয়তো ভাবছে, বিএনপিকে বাইরে রেখে ফাঁকা মাঠে গোল দেবে। কিন্তু বিএনপিও যে কোনো মুহূর্তে যে কোনো কৌশল গ্রহণ করতে পারে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি অনুযায়ী এই নির্বাচন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দলের প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, বিএনপিকে একটি টোপে ফেলার চেষ্টা করছে সরকার। কিন্তু কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না আওয়ামী লীগ। জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরে না আসা পর্যন্ত বিএনপির আর অন্য দিকে তাকানোর কোনো সুযোগ নেই। ঢাকা সিটি করপোরেশন নিয়ে সরকার শুরু থেকেই ষড়যন্ত্র করে আসছে দাবি করে তিনি বলেন, নির্বাচিত মেয়র সাদেক হোসেন খোকাকে সরিয়ে অনির্বাচিত দুই প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। তাদের মূল উদ্দেশ্য, ঢাকা মহানগরের প্রশাসনিক ক্ষমতা দখল করা।

সর্বশেষ খবর