শুক্রবার, ৩ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

নিখুঁত ফাঁদ অভিনব স্টাইল

নিখুঁত ফাঁদ অভিনব স্টাইল। বাকিতে ছিনতাই করার অভিনব ঘটনা ঘটছে রাজধানীর গুলশান ও বনানী এলাকায়। ছিনতাইকারী ও প্রতারক চক্রের সদস্যরা পথ চলতে টার্গেট ব্যক্তিকে বিপাকে ফেলে ভদ্রতার সঙ্গে ছিনতাই করে থাকে। এ ক্ষেত্রে বিপাকে পড়া ব্যক্তির কাছে নগদ টাকা যা থাকে তা হাতিয়ে নিয়ে ‘ধার্যকৃত বাকি টাকা’ পরিশোধের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। এ জন্য পরিচিত কোনো ব্যক্তিকে জিম্মাদার করে অথবা মূল্যবান কাগজপত্র রেখে বাসা থেকে টাকা এনে দিয়ে তবেই তার নিস্তার মেলে। নাখালপাড়ার বাসিন্দা তাকবীর হোসেন অভিনব এ ছিনতাইয়ের ফাঁদে পড়েন। তিনি জানান, সোমবার সন্ধ্যায় বনানীর ব্যস্ততম কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ে হেঁটে এক আদম ব্যবসায়ীর অফিসে যাচ্ছিলেন। অপরিচিত এক যুবক আচমকা তাকে ধাক্কা মেরে নিজের বিকল আইফোন মোবাইল সেটটি রাস্তায় ফেলে দেন। এতে আইফোনটি ভেঙে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। এ সময় ক্ষতিগ্রস্তের ভান ধরা যুবকটির পক্ষে আরও সহযোগীরা এসে ভিড় জমায়। ছিনতাইকারীর সহযোগীরা পথচারী পরিচয়ে তাকবীর হোসেন ও আইফোন ভেঙে কথিত ক্ষতিগ্রস্ত যুবককে ডেকে নিয়ে সমঝোতা করে দেন। সিদ্ধান্ত হয় মোবাইল ফোন মেরামত করে দেবেন তাকবীর। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বনানী ও গুলশান ২ নম্বর গোল চত্বরের কয়েকটি মোবাইলের দোকান ঘুরেও আইফোন মেরামতকারীর খোঁজ মেলে না। একপর্যায়ে ডেসা ভবনের অদূরে এক মোবাইল দোকানি আইফোনটি মেরামত করতে রাজি হন, তবে পার্টসসহ মজুরি হাঁকেন ২২ হাজার টাকা। উপায়ান্তরহীন তাকবীর নিজের কাছে থাকা ৯ হাজার টাকা মেকারের হাতে জমা দেন এবং বাকি টাকা এনে দিতে নাখালপাড়ার বাসায় যেতে উদ্যত হন। এ সময় মোবাইল মেকার তাকবীরের ভিসাযুক্ত পাসপোর্ট, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রসংবলিত ব্যাগ গচ্ছিত রাখার বিনিময়ে তাকবীরকে ছেড়ে দেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মহাখালী তিতুমীর কলেজ গেটের অদূরে অভিন্ন স্টাইলের ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন টঙ্গীর বাসিন্দা মনোয়ার মিয়া। তিনি এক আÍীয় রোগীকে দেখার জন্য বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ঘুরে মহাখালী মোড়ে ফেরার সময় অভিনব প্রতারণামূলক ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন। তাকেও তাকবীর হোসেনের মতো বিপাকে ফেলে বিভিন্ন মোবাইল দোকান ঘুরিয়ে কাকলী এলাকার এক মেকারের কাছে নেওয়া হয়। ওই মেকার ৮ হাজার টাকা নগদ ও ১০ হাজার টাকা বাকিতে ছেড়ে দেন মনোয়ার মিয়াকে। তবে মনোয়ারের সঙ্গে আসা ভাগ্নেকে মোবাইল মেকারের দোকানে বসিয়ে রাখা হয়। ফলে রাত সাড়ে ৯টায় বিকাশের মাধ্যমে টাকা আনিয়ে মোবাইল মেকারের হাতে তুলে দিয়ে তবেই রেহাই মেলে তার। এসব ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বনানী ও গুলশান থানার ডিউটি অফিসার জানান, ‘ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তবে গতকাল রাত পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানান।

সর্বশেষ খবর