সদ্য কারামুক্ত সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর প্রশ্নে হার্ডলাইনে সরকার। বিতর্কিত এই সাবেক মন্ত্রী ও রাজনীতিক খুব শিগগিরই আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হতে যাচ্ছেন। দলটির হাইকমান্ড বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত করেছেন। দু-এক দিনের মধ্যেই মিডিয়ার কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করা হবে। একই সঙ্গে লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকে বহিষ্কারের চিঠি নির্বাচন কমিশন ও জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে পাঠানো হবে। নির্বাচন কমিশন ও জাতীয় সংসদকে বিষয়টি অবহিত করার পর সংবিধানমতে, সংসদ সদস্য পদ হারাবেন লতিফ সিদ্দিকী।
সূত্রমতে, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দল ও সরকারে কোনো বিতর্কিত ব্যক্তিকে স্থান দিয়ে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চান না। লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দলের সিনিয়র পর্যায়ের কয়েক নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রের আভাস। সূত্রমতে, লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকে বহিষ্কারের ব্যাপারে সরকারের নীতিনির্ধারকরাও প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী দলের সিনিয়র নেতাদের পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়েই বহিষ্কারপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে চান। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জ্যাকসন হাইটে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও ধর্মের অবমাননা করে বক্তব্য দিয়ে চরমভাবে বিতর্কিত হন লতিফ সিদ্দিকী। এ সময় অনেক নাটকীয়তার জন্ম দিয়ে এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে ভারতে কয়েক দিন অবস্থান করেন সাবেক এই মন্ত্রী। ভারতের কলকাতা থেকে দেশে ফিরেই গ্রেফতার হন তিনি। কয়েক মাস কারাভোগের পর গত সোমবার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
জামিনে মুক্ত হওয়ার পর লতিফ সিদ্দিকী সম্পর্কে আবার রাজনৈতক অঙ্গনে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরেও তাকে নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। লতিফ সিদ্দিকী ফিরে আসতে পারেন মন্ত্রিসভায়- এমন গুঞ্জনও ছড়াচ্ছেন কেউ কেউ। তবে সরকারের শীর্ষস্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, মন্ত্রিসভায় ফিরে আসা দূরের কথা দলের প্রাথমিক সদস্যপদও থাকছে না তার। গত বছর সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হয়ে সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী যুক্তরাষ্ট্রে যান। ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের একটি হোটেলে আলোচনায় মহানবী (সা.) ও ধর্মের অবমাননা করে বক্তব্য দেন লতিফ সিদ্দিকী। এতে দেশে-বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠলে তিনি মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারান। তবে দল থেকে বহিষ্কারের চিঠিটি জাতীয় সংসদ সচিবালয় ও নির্বাচন কমিশনে না পাঠানোর কারণে তার সংসদ সদস্য পদ এখনো বহাল রয়েছে। সূত্র জানায়, এবার বহিষ্কারের চিঠি জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে পাঠানো হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে, দল থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি অচিরেই সংসদ সদস্য পদ হারাতে পারেন লতিফ সিদ্দিকী।