মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সাকা চৌধুরীর পক্ষে আটজনের সাক্ষ্য গ্রহণের আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাকা চৌধুরীর পক্ষে আটজনের সাক্ষ্য গ্রহণের আবেদন

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) শুনানিতে পাঁচ পাকিস্তানিসহ আটজনের সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণ করার জন্য আবেদন করা হয়েছে।

গতকাল সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সাকা চৌধুরীর পক্ষে তার আইনজীবীরা এ আবেদন করেন। আদালতে এসে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য এই আটজনের নামে সমন জারির আবেদন জানানো হয়েছে। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, বিচারের এ পর্যায়ে এসে এ ধরনের আবেদন নজিরবিহীন। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলছেন, ন্যায়বিচারের স্বার্থে আপিল বিভাগ তার অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়োগ করে যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। যে আটজনের নামে সমন চাওয়া হয়েছে তারা হলেন- পাকিস্তানের সাবেক তত্ত্বাধায়ক সরকারের প্রধান মোহাম্মদ মিয়া সুমরো, পাকিস্তানি স্থপতি মুনিব আরজুমান্দ খান, পাকিস্তানের ডন মিডিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আমবর হারুন সায়গল, পাকিস্তানের সাবেক মন্ত্রী ইসহাক খান খাকওয়ানি, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ খান নূনের নাতি রিয়াজ আহমেদ নূন। বাকি তিনজন হলেন- যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাবেক কূটনীতিক মো. ওসমান সিদ্দিক, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি শামীম হাসনাইন ও তার মা জিনাত আরা বেগম। পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে রিভিউর সুযোগ খুবই কম। সাধারণত আদালতের কোনো ভুল পরিলক্ষিত হলে পুনর্বিবেচনার সুযোগ থাকে। আর সাকা চৌধুরীর পক্ষে সাক্ষ্য গ্রহণের আবেদন করা হয়েছে নির্ধারিত সময়ের পরে। এখন এ আবেদন আমলে নিলে অরাজকতা সৃষ্টি হবে। প্রতিটি আসামি একের পর এক দরখাস্ত করবেন। অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, এ ছাড়াও এ মামলার বিচারের সময় সাকা চৌধুরী নানা ধরনের তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেছেন। আর এগুলো যাচাই-বাছাই করে ট্রাইব্যুনাল এবং উচ্চ আদালত বিচার করেছেন। এখন কয়েকজনকে সমন চেয়ে একটি দরখাস্ত করেছেন। এটা আদালতে বিচার্য। অপরদিকে সাকা চৌধুরীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, প্রয়োজনে আপিল বিভাগ সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে এসব ব্যক্তিকে সমন দিয়ে এ ব্যাপারে (যুদ্ধের সময় সাকা চৌধুরী পাকিস্তানে ছিলেন কিনা) নিশ্চিত হতে পারেন। এতে পরিষ্কার হবে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো মিথ্যা, বানোয়াট এবং জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। খন্দকার মাহবুব বলেন, সাকা চৌধুরীর সুনির্দিষ্ট ডিফেন্স হচ্ছে তিনি চট্টগ্রামে থাকতেন না। তিনি ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের আগে থেকে নটর ডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুবাদে ধানমন্ডির পৈতৃক বাসায় থাকতেন। ২৯ মার্চ পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন এবং ১৯৭৪ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকায় আসেন। পাঞ্জাব যাওয়ার সময় কাইউম রেজা চৌধুরী তাকে ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে নিজ গাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা ট্রাইব্যুনালে বলেছেন। সাকা চৌধুরী ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরেক আসামি জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানির দিন ঠিক করতে রাষ্ট্রপক্ষের একটি আবেদন আজ চেম্বার বিচারপতির আদালতে উপস্থাপনের কথা রয়েছে। ১৪ অক্টোবর তারা এই রিভিউর আবেদন করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর