বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
খো লা চো খে

একটি জাতীয় ঐক্যের ডাক

মোহাম্মদ এ আরাফাত

আমাদের প্রিয় স্বদেশ এই মুহূর্তে একটি অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছে। আমরা এমন এক সংযোগপথে রয়েছি যেখানে দুটি পরস্পর বিপরীতমুখী পক্ষ-স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তি এবং স্বাধীনতার বিপক্ষের অপশক্তি দেশকে দুটি ভিন্ন পথে নিয়ে যেতে চাইছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার নিরলসভাবে ১৯৭১ এর চেতনায় প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছে। শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলার এই সংগ্রামে, তিনি প্রতিনিয়ত স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সোনার বাংলার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তক ঘটনার পরবর্তীকালে দেশকে পরিকল্পিতভাবে তার প্রতিষ্ঠাকালীন ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকে সরিয়ে বিপরীতমুখে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা হয়। বর্তমানে, বাস্তবতা হচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী ও পশ্চাৎমুখী অপশক্তি যথেষ্ট শক্তিশালী এবং আমাদের তাদের বিষয়ে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। শুধুমাত্র আবেগ দ্বারা চালিত হওয়ার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। আমাদের বক্তব্য, কর্ম ও সিদ্ধান্ত সুচিন্তিত ও সুবিবেচনার সঙ্গে গ্রহণ করতে হবে। ইতিহাসের এই সংকটময় সময়ে আমাদের ভুল করার কোনো সুযোগ নেই। একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া বা একটি কাজ ভুল ছিল বা ঠিক তা নির্ণয়ের জন্য, ওই কাজের সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। এই মুহূর্তে সবচেয়ে ওয়াকিবহাল ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া আর অন্য কেউ নন এবং তার দেশপ্রেম, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা এবং সততা নিয়ে কোনো ধরনের সন্দেহের অবকাশ নেই। আমরা আশ্বস্ত থাকতে পারি এজন্য যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় তিনি আমাদের দেশ ও জাতির স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়ে এসেছেন। একাত্তরের সপক্ষের রাজনীতির সৈনিক হিসেবে, আমাদের সেনাপতি শেখ হাসিনার বাস্তবমুখী ও দূরদর্শী নেতৃত্বের অধীনে ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিত। যদিও আমি বিশ্বাস করি গঠনমূলক সমালোচনার দরকার আছে, তবুও এই মুহূর্তে সময়ের দাবি হচ্ছে আমাদের সেনাপতিকে নিরঙ্কুশ সমর্থন জানানো। দয়া করে মনে রাখবেন আমাদের মাঝে বিভ্রমে ভোগা কেউ যদি মনে করেন যে আপনি বেশি বুঝেন বা নিজেকে আমাদের নেত্রীর চেয়েও বেশি প্রতিশ্রুতিশীল মনে করেন বা এমন কাজ করেন যা নেত্রীর বিরুদ্ধে যায়, তবে আমি দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে সেটা হবে স্বাধীনতাবিরোধীদের ক্রীড়নক হয়ে কাজ করা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য এই মুহূর্তটি হচ্ছে আমাদের সংগ্রামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। আমাদের দিকহারা হলে চলবে না, নিজেদের অযথা দুর্বল করে এবং আবেগপ্রবণ হয়ে বাগাড়ম্বর করে শত্রুপক্ষকে সুবিধা দেওয়াও ঠিক হবে না। যেকোনো মূল্যে স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তি, প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। হ্যাঁ, আমি একটি জাতীয় ঐক্যের কথা বলছি, কিন্তু এই ঐক্য হতে হবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের উপর ভিত্তি করে।

লেখক : শিক্ষক ও গবেষক, আহ্বায়ক, সুচিন্তা বাংলাদেশ চেয়ারম্যান, সুচিন্তা ফাউন্ডেশন

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর