সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
টি-২০ সিরিজে সমতা

ব্যাটসম্যানরা ডুবাল বাংলাদেশকে

আসিফ ইকবাল

যাকে বলে মধূর প্রতিশোধ! প্রথম টি-২০ বাংলাদেশ জিতেছিল ছক্কা হাঁকিয়ে। ছক্কা মেরে মাশরাফি জয় উপহার দিয়েছিলেন টাইগারদের। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে মাশরাফি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলেন মাদজিবার অবিশ্বাস্য ছক্কা। নাসির হোসেনকে লং অন দিয়ে সীমানার বাইরে আছড়ে ফেলে মাদজিবা ৩ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় উপহার দেন জিম্বাবুয়েকে। অবিশ্বাস্য এই জয়ে শেষ পর্যন্ত হাসিমুখেই দেশে ফিরে যাচ্ছেন এল্টন চিগুম্বুরারা। হারেই বছর শেষ করলেন মাশরাফিরা। হারের দায়ভার বহন করতে হবে ব্যাটসম্যানদেরই। এনামুল হক বিজয় ছাড়া বাকি ১০ ব্যাটসম্যানের মোট রান ৮৮! আর্মি স্টেডিয়ামে ‘ফোক ফেস্ট’ অনুষ্ঠানে প্রথম দেখা গিয়েছিল মোবাইল ফোনের ফ্লাশ লাইট জ্বালিয়ে রাতের নিশুতিকে আলোকিত করতে। নিকষ কালো অন্ধকারে ফ্লাশ লাইটের আলোগুলোকে মনে হচ্ছিল হাজারও জোনাক পোকা উড়ছে, ঘুরছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে মিরপুর স্টেডিয়ামেও অবতারণা হয়েছিল একই দৃশ্যের। ফ্লাড লাইটের আলোকে ছাপিয়ে জায়গা করে নেওয়া হাজারও মোবাইলের ফ্লাশ লাইট আলোয় আলোকিত করে গ্যালারিতে সৃষ্টি করেছিল মায়াবী মধুর পরিবেশের। উৎসব, উচ্ছ্বাসে মেতে থাকা ক্রিকেটপ্রেমীরা প্রিয় দলের পারফরম্যান্সে এতটাই উদ্বেলিত যে, জয়োৎসব পালনে এর চেয়ে ভালো কিছুর সন্ধান পাননি! প্রথম টি-২০ জয় এভাবেই পালন করেছিলেন। গতকালও উৎসব পালনের মঞ্চ তৈরি করেছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু সেই উৎসবে জল ঢেলে দেন ওয়ালার, মাদজিবারা। ওয়ানডে সিরিজে বিপাকে পড়তে হয়নি ব্যাটসম্যানদের। এল্টন চিগুম্বুরা, পানিয়াঙ্গাদের সহজ প্রতিপক্ষ বানিয়ে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে। কিন্তু টি-২০ সিরিজে লাইনচ্যুত হয়ে পড়েন ব্যাটসম্যানরা। প্রথম টি-২০ ম্যাচ জিতলেও হারাতে হয়েছিল ৬ উইকেট। হাফ সেঞ্চুরি ছিল না কোনো ব্যাটসম্যানের। দ্বিতীয় ম্যাচেও একই অবস্থা। সর্বোচ্চ ৪৭ রান বিজয়ের। অথচ ইনিংসটি টি-২০ ম্যাচের সঙ্গে মানানসই নয়। স্ট্রাইক রেট ৯২.১৫! জিম্বাবুয়ের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বাংলাদেশের শেষ ৬ ব্যাটসম্যানের সংগ্রহ মাত্র ১৮! টার্গেট ১৩৬। আল-আমিন, আরাফাত সানিদের নিখুঁত বোলিংয়ে ম্যাচের রশি নিজেদের দিকে টেনে ধরেছিল টাইগাররা। কিন্তু শুরুর এই রেশ শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেনি ওয়ালার ও মাদজিবার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে। শেষ ২ ওভারে জয়ের জন্য আফ্রিকান দেশটির প্রয়োজন ছিল ২৪ রান। ‘বিস্ময় বোলার’ মুস্তাফিজ অসাধারণ বোলিং করে মাত্র ৬ রান দেন ওই ওভারে। তবে ওই ওভারটিই ম্যাচের ভাগ্য ঘুরিয়ে দেয়। মাদজিবা ব্যক্তিগত ১০ রানে আউট হলেও মুস্তাফিজের বলটি ছিল ‘নো’। ফলে জীবন পেয়ে শেষ ওভারে প্রয়োজনী ১৮ রান তুলে নেন ৫ বলে। জিম্বাবুয়েকে জয় পেতে ৬ বলে করতে হতো ১৮ রান। নাসির প্রথম বলে সাজঘরে পাঠান ওয়ালারকে। ৫ বলে ১৮ রান। দ্বিতীয় বলে কাভারে ছক্কা হাঁকান মাদজিবা। পরের বলে ২, পরেরটিতে বাউন্ডারি। এরপর পঞ্চম বলে ছক্কা মেরেই ব্যাট উঁচিয়ে গ্যালারিতে উপস্থিত হাজারও দর্শকের উৎসব পালনের মঞ্চে জল ঢেলে দেন। উপহার দেন জয়। এই জয়ে টি-২০ সিরিজটি ১-১ ড্র হয়।

সর্বশেষ খবর