সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

পাকিস্তান মর্মাহত বিরক্ত বিব্রত

হাইকমিশনারকে তলব

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির পর এবার সরাসরি পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিবৃতি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে পাকিস্তান নিজেকে উদ্বিগ্ন, মর্মাহত ও বিব্রত বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশকে মীমাংসার পরামর্শ দিয়েছে। মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি ইসলামাবাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদ উভয়কেই বিএনপির নেতা বলে উল্লেখ করে পাকিস্তান। ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পরদিন গতকাল পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগ ও বেদনার সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদের ‘দুঃখজনক’ ফাঁসির ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছি। এই প্রক্রিয়ায় পাকিস্তান যথেষ্ট বিব্রত। সেই সঙ্গে ১৯৭১ সালের ঘটনাপ্রবাহকে ঘিরে বাংলাদেশে চলমান ‘দ্বিধান্বিত’ বিচারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়াকেও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।’ বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়, ‘১৯৭৪ সালের ৯ এপ্রিল বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান স্বাক্ষরিত চুক্তির চেতনাকে ধারণ করে বাংলাদেশের মীমাংসায় আসা উচিত। সামনে এগিয়ে যাওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই ১৯৭১ সালের বিষয়গুলোকে দেখার আহ্বান থেকেই সেই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এর মাধ্যমে সুসম্পর্ক ও সম্প্রীতিই বাড়বে।’ রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ার পরদিন শুক্রবার পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির সিরাজুল হক ফাঁসি ঠেকাতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ নিতে ইসলামাবাদের পররাষ্ট্র দফতরের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন। পাকিস্তান জামায়াতের সেই বিবৃতিতেও ১৯৭৪-এর চুক্তির ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। যার প্রতিধ্বনি দেখা গেল এবারের বিবৃতিতেও। সিরাজুল হক বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতারা পাকিস্তানের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। এখনো তারা সেই দেশের সৃষ্টিকে ভুলে গিয়ে পাকিস্তানের মতাদর্শ ধারণ করে চলছেন।’ এর আগে যুদ্ধাপরাধী আবদুল কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামানের ফাঁসির পর পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহল থেকে প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়েছিল। সে দেশের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পার্লামেন্টে এ নিয়ে আলোচনা হলেও পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ‘ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’ কিন্তু এবার সেই অবস্থান পরিবর্তন করে অন্য একটি স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করে পাকিস্তান কূটনৈতিক শিষ্টাচার ভঙ্গ করল।

পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে তলব : যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি নিয়ে পাকিস্তানের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছে বাংলাদেশ। এর প্রতিবাদে ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সুজা আলমকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে। তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আজ দুপুরে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মিজানুর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর