মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুর খুনি নূরকে ফেরাতে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ

আনিস রহমান

বঙ্গবন্ধুর খুনি নূরকে ফেরাতে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত অন্যতম পলাতক আসামি এইচ বি এম নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনতে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। গতকাল এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। কানাডা থেকে নূর চৌধুরীকে ধরে আনার আইনি ব্যয় মেটাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী এই বরাদ্দ।

সূত্র জানায়, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৪৮৮২ আইন সংক্রান্ত ব্যয় খাতে ছয় কোটি  টাকা বরাদ্দ আছে। ওই খাত থেকে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনতে আইনি প্রক্রিয়া সংক্রান্ত ব্যয় নির্বাহের জন্য ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যবহার করা যাবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব হোমায়রা বেগম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৪৮৮২ আইন অনুযায়ী ব্যয় খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রয়োজন হলে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগ থাকবে।

পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামি নূর চৌধুরী কানাডায়, এ এম রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে, আবদুল মাজেদ ভারতে অবস্থান করছেন। তবে এরই মধ্যে রিসালদার মোসলেহউদ্দিন ভারতে মারা গেছেন বলে গুজব রয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামি শরিফুল হক ডালিম, আবদুর রশীদ ও আবদুল মজিদের অবস্থান সম্পর্কে পুলিশ নিশ্চিত না হলেও ইন্টারপোলের মাধ্যমে তৎপরতা চলছে। অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর একে একে প্রত্যেককেই দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত আছে। শুধু তাই নয়, জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা-মামলা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মামলা, চট্টগ্রামের আট খুন মামলার আসামিসহ বিদেশে পলাতক ২০ জন আসামির অবস্থান শনাক্ত এবং গ্রেফতার করে দেশে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম চলছে। শিগগিরই প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, ভারত ও থাইল্যান্ড ছাড়া আর কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দী বিনিময় চুক্তি নেই। অন্যান্য দেশ থেকে আসামি আনতে হলে ক‚টনৈতিক চ্যানেলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আনতে হবে। তাই, অপরাধীদের ফিরিয়ে আনতে ক‚টনৈতিক চ্যানেলেই আলাপ-আলোচনা চলছে। এ সংক্রান্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে। এ টাস্কফোর্স বিদেশে পালিয়ে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে যারা বিভিন্ন মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত বা বিচারের জন্য আসামি হিসেবে চিহ্নিত তাদের তালিকা প্রণয়ন করছে। এ কমিটি বিদেশে এসব আসামির অবস্থান, দেশে ফিরিয়ে আনার উপায় খুঁজে বের করাসহ সব কাজ করবে। গত পাঁচ বছরে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ১১ অপরাধীকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে। সর্বশেষ গত ১২ নভেম্বর ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের আসামি নূর হোসেনকে। এর আগে ১৫ অক্টোবর সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় সিলেটের শিশু রাজন হত্যা মামলার আসামি কামরুল ইসলামকে। এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাণনাশের চেষ্টা মামলার আসামি নাজমুল মাকসুদ মুরাদ, উত্তর কোরিয়া থেকে শিমুল, আবুধাবি থেকে নরসিংদীর পৌর মেয়র লোকমান হত্যা মামলার সঙ্গে জড়িত তারেক আহমেদ, মালয়েশিয়া থেকে নূরুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবুল কালাম ওরফে কালাম, সিঙ্গাপুর থেকে হত্যা মামলার পলাতক আসামি ফারুক হোসেন, মালয়েশিয়া থেকে রমনা থানা মসজিদের ইমাম হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবদুর রহিম, সৌদি আরব থেকে খুনের অপরাধে অভিযুক্ত আসামি আবু তাহের আল নূর মিয়া এবং খুনের অপরাধে অভিযুক্ত আসামি আবদুর রহিম মিয়া ওরফে গফুরকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে নিউজিল্যান্ড থেকে।

সর্বশেষ খবর