শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন

গোলাম রাব্বানী

প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন

দলীয়ভাবে প্রথমবারের মতো ২৩৬ পৌরসভায় ভোট গ্রহণ করতে প্রস্তুত রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্দলীয় নির্বাচন হওয়ায় এই দুই পদের প্রায় দেড় কোটি ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষ হলেই মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে ব্যালট ছাপাবে ইসি। ভোট গ্রহণ করতে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে প্রায় ৬২ হাজার কর্মকর্তাকে। এদিকে ভোট গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহও শেষ হয়েছে। মনোনয়নপত্র পাঠানো হয়েছে রিটার্নিং অফিসারদের কাছে। ভোটার তালিকাও প্রস্তুত রয়েছে। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের কাজও চলছে। ভোট গ্রহণের জন্য কেন্দ্রগুলোর সংস্কারকাজ করতেও নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। তবে মন্ত্রী-এমপিদের নির্বাচনী প্রচারে সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে আবারও ইসিতে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। প্রার্থীরা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রতি ওয়ার্ডের জন্য ৫০০ টাকা জমা দিয়ে ভোটার তালিকার সিডিও সংগ্রহ করতে পারবেন। সব পৌরসভায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের পোস্টার-বিলবোর্ড সরিয়ে ফেলতে গতকাল ইসির বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হয়েছে। আজ মাঠপর্যায়ে ইসির কর্মকর্তারা পোস্টার-বিলবোর্ডের খোঁজে নামবেন। আজ কোনো প্রার্থীর পোস্টার পাওয়া গেলে তার প্রার্থিতাও বাতিল হতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ। ভোটের প্রস্তুতির বিষয়ে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’ নির্বাচনে সব দলের জন্য সমান সুযোগ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে স্বপদে থেকে ভোট করতে পারছেন মেয়ররা। ভোটার অনুপাতে মেয়র প্রার্থীরা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয় করতে পারবেন। পৌরসভায় প্রতি দল পারবে এক লাখ টাকা ব্যয় করতে। পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলফনামাসহ পাঁচটি কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। ইসির সহকারী সচিব রাজীব আহসান জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীদের আগাম প্রচারণামূলক সব ধরনের সামগ্রী অপসারণ ও মুছে ফেলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ২৩৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং পুলিশ প্রশাসনের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নিজ উদ্যোগে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তা না সরালে নির্ধারিত সময়ের পর বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে চিঠিতে। এ ক্ষেত্রে প্রার্থী হওয়ার পর বিধি লঙ্ঘনকারীকে জেল, জরিমানা ও সর্বোচ্চ শাস্তি প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে ইসির। ব্যক্তিগত ও নির্বাচনী ব্যয় : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ জানান, প্রতি পৌরসভায় রাজনৈতিক দল সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবে। চেকের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা অনুদান নিতে পারবেন প্রার্থীরা। ২৩৬ পৌরসভায় প্রার্থী দিলে সর্বোচ্চ দুই কোটি ৩৬ লাখ টাকা দলীয় ব্যয় করার সুযোগ রয়েছে। ভোট শেষে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ব্যয়ের হিসাববিবরণী জমা দিতে হবে দলকে। মেয়র পদে ব্যক্তিগত খরচ অনধিক ২৫ হাজার ভোটার-সংবলিত পৌরসভার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা, ২৫ হাজার এক থেকে ৫০ হাজার ভোটার-সংবলিত পৌরসভার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা, ৫০ হাজার ১ থেকে এক লাখ ভোটার-সংবলিত পৌরসভার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা এবং এক লাখ এক ও তদূর্ধ্ব ভোটার সংবলিত পৌরসভার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করা যাবে। মেয়র প্রার্থীরা নির্বাচনী ব্যয় বাবদ এ ভোটার অনুপাতে দুই লাখ, তিন লাখ, চার লাখ ও পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন। এ ছাড়া কাউন্সিলর পদে ব্যক্তিগত খরচ পাঁচ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা এবং নির্বাচনী ব্যয় বাবদ ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা খরচ করতে পারবেন। ৩০ ডিসেম্বর মেয়াদোত্তীর্ণ ২৩৬টি পৌরসভার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩ ডিসেম্বর। যাচাই-বাছাই ৫ ও ৬ ডিসেম্বর এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৩ ডিসেম্বর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর