শিরোনাম
শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মসজিদে হামলাকারীরা সাচ্চা মুসলমান নয়

প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা মসজিদে হামলা চালাচ্ছে তারা সাচ্চা মুসলমান নয়। মসজিদে নামাজের সময় মানুষ খুন করা কোনো সাচ্চা মুসলমানের কাজ হতে পারে না। যারা ধর্মের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, তারা বিকৃত মানসিকতার। গতকাল সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ ও সংসদীয় বোর্ডের যৌথ সভায় দলীয় সভাপতির সূচনা বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বগুড়ার শিবগঞ্জে শিয়া সম্প্রদায়ের একটি মসজিদে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে মুয়াজ্জিনকে হত্যা করে। গুলিতে আহত হন ইমামসহ তিনজন মুসল্লি। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,  তারা ধর্মের নামে মানুষ হত্যা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে বিশ্বে মুসলমানদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলছে। ধর্মের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো ব্যক্তিদের ‘উন্মাদ’ আচরণ ইসলামের বদনাম করছে। ইসলামের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর ফলে সুযোগটা কে নিচ্ছে- প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আমাদের স্বাধীনতার সমর্থন করেনি, যারা হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করেছিল, তারা একে অপরে মিলে বাংলাদেশকে ধ্বংসের দিকে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির দ্বৈততা (দুই নীতি) আছে। তারা সংসদ নির্বাচন ও উপনির্বাচনে অংশ নেয় না। আবার স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী দেয়। এবার দলীয় প্রতীকেই স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। দেখতে চাই, নিজ দলের মার্কা নিয়ে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয় কিনা। এটি তাদের জন্য একটি বড় সুযোগ। নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে দলীয়ভাবে মেয়র মনোনয়ন ও কাউন্সিলর সমর্থনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ সভায় শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্র তখনই শক্তিশালী হয়, যখন রাজনৈতিক দলগুলো শক্তিশালী হয়। স্থানীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সেই সুযোগ তৈরি হবে। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীকে পৌরসভা নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ চায়। এতে নিজ নিজ দলও শক্তিশালী হবে। অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা দখল করায় সাবেক সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের ক্ষমতা দখল ছিল অবৈধ। হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা দখলকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। এখন থেকে জিয়া ও এরশাদকে সাবেক প্রেসিডেন্ট বললে আদালত অবমাননা হবে।  শেখ হাসিনা বলেন, অতীতে সব সময় স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন যদি দলীয়ভাবে হতো তবে রাজনৈতিক দলগুলো আরও শক্তিশালী হতো। গণতন্ত্র বিকশিত হতো। এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ত। অন্যদিকে প্রার্থীরাও ভোটারদের স্বার্থের দিকে খেয়াল রাখতে বেশি মন দিতেন। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় নির্বাচনমুখী দল। আমরা চাই সব দল সব নির্বাচনে অংশ নিক। এতে দলগুলোর জন্যই ভালো। তিনি বলেন, যদিও ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি যোগ দেয়নি। তারা ওই নির্বাচন বাতিল করতে অনেক কিছু করেছে। কিন্তু সফল হতে পারেনি। আসলে বিএনপি জন্মলগ্ন থেকেই হত্যার রাজনীতি করে আসছে। আবার তাদের মধ্যে একটা দ্বৈততা আছে। এবার একটু দেখতে চাই নিজ দলের মার্কা নিয়ে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয় কিনা। এটি তাদের জন্য একটি বড় সুযোগ। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের প্রতি তাদের কোনো দরদ নেই। মানুষের প্রতিও কোনো দরদ নেই। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি। এ কারণে তারা সহ্যও করে না যে, বাংলাদেশ মর্যাদা নিয়ে চলবে। বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, কেবল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নতি হয়। কারণ আওয়ামী লীগ দেশের জন্য, মানুষের জন্য রাজনীতি করে। আওয়ামী লীগ চায় বাংলাদেশ মর্যাদা নিয়ে চলবে।

এ সময় সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর পত্র-পত্রিকায় আসা একসঙ্গে দুজনের প্রথমবারের ফাঁসির খবরের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারাগারে দুজনের ফাঁসি এই প্রথমবার হয়নি। জিয়াউর রহমানের সময় ১৯টি ক্যু হয়। সে সময় ঢাকা কেন্দ্রীয়, কুমিল্লা, খুলনা, বগুড়া কারাগারগুলোতে জোড়ায় জোড়ায় ফাঁসি হয়েছে। 

সভা পরিচালনা বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, পৃথিবীর সব দেশে দলীয়ভাবেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়। আমরাও সে উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু কিছু কিছু টকশো ব্যক্তিত্ব এটাকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করেন যেন কবিরা গুনাহ হয়।

সর্বশেষ খবর