শিরোনাম
শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

১৫ হাজারেরও বেশি মনোনয়ন জমা, প্রচার শুরু ৯ ডিসেম্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গতকাল ২৩৫ পৌরসভায় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের প্রার্থীরা। ২৩৫টি মেয়র পদ, সাধারণ কাউন্সিলর পদ ২ হাজার ৯৫২টি ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদ ৭৩৮টি মিলে প্রায় ৪ হাজার পদে ১৫ হজারের বেশি মনোনয়নপত্র জমার প্রাথমিক তথ্য দিয়েছে ইসি। ৫ ও ৬ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কাজ চলবে। ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় রয়েছে। এরপর ১৪ ডিসেম্বর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাই থাকবেন ভোটে। ভোটের ২১ দিন আগে প্রার্থীরা প্রচারের সুযোগ পাবেন না। সে ক্ষেত্রে ৯ ডিসেম্বর থেকে প্রতীক ছাড়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারণায় যেতে পারবেন। নির্দলীয়ভাবে সর্বশেষ ২০১১ সালে পৌর নির্বাচনে আড়াইশ’ পৌরসভায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর ১৫ হাজারেরও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। এর মধ্যে মেয়র পদে ১ হাজার ২০০, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩ হাজার ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১০ হাজার ৩০০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ইসির একজন কর্মকর্তা জানান, এবার ৪০টি নিবন্ধিত দলের অর্ধেকেরও বেশি অংশ নিচ্ছে মেয়র পদের ভোটে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ছড়াছড়িও থাকবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে দলগুলো একক প্রার্থী মনোনীত করায় দলবিদ্রোহী ও মনোনয়নবঞ্চিতদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ ছিল। দলীয়ভাবে মেয়র ভোট হওয়ায় নির্দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোটে আগ্রহ বেড়েছে।

প্রথমবারের মতো দলীয়ভাবে এ নির্বাচনে লিখিত প্রত্যয়ন নিয়ে রাজনৈতিক দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা ও ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর নিয়ে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া নির্দলীয়ভাবে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে অনেক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ইসি জানিয়েছে, ভোটের ২১ দিন আগে প্রার্থীরা প্রচারের সুযোগ পাবেন না। সে ক্ষেত্রে ৯ ডিসেম্বর থেকে প্রতীক ছাড়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারণায় যেতে পারবেন। প্রতীক নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচার ১৪ ডিসেম্বর থেকে করতে পারবেন। এবারে নির্বাচন কমিশন ২৩৫টি পৌরসভার জন্য স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে ৩ হাজার ৫৭৩টি ভোট কেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করেছে। এদিকে চাঁদপুরের মতলব ও উত্তর চট্টগ্রামের রাউজানের কয়েকটি জায়গা প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়া অভিযোগ পাওয়া গেছে। কমিশন খোঁজ নিয়ে দেখেছে, এ অভিযোগ কিছুটা সত্য হলেও পুরোপুরি নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে ইসি।

পৌর নির্বাচনে কাউকে বাধা দিলে ব্যবস্থা : পৌরসভা নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দিতে বা নির্বাচনী কাজে কেউ বাধা দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল শেরেবাংলানগরে ইসি কার‌্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কমিশন সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। অন্যায়ভাবে কাউকে বাধা দিলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, চাঁদপুরের মতলব ও উত্তর চট্টগ্রামের রাউজানের কয়েকটি জায়গা থেকে অভিযোগ এসেছে, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। কমিশন খোঁজ নিয়ে দেখেছে এ অভিযোগ কিছুটা সত্য হলেও পুরোপুরি নয়। শাহনেওয়াজ বলেন, এ নির্বাচনে সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। অস্বাভাবিক কিছু ঘটলে আমরা ব্যবস্থা নেব। নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা রেখে অনিয়ম সম্পর্কে আমাদের জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিছু জায়গায় বিএনপির প্রার্থীরা প্রতিপক্ষের বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন এমন অভিযোগের বিষয়ে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোট অবাধ, নিরপেক্ষ করার জন্য যা যা করা দরকার আমরা করে যাচ্ছি। প্রতীক নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচার ১৪ ডিসেম্বর থেকে করতে পারবেন। শাহনেওয়াজ বলেন, ভোটের ২১ দিন আগে কোনো প্রচার নয়। কেউ বিধি লঙ্ঘন করলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের ২৩৬ প্রার্থীর তালিকা ইসিতে : আসন্ন পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনীতদের তালিকা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ গতকাল বিকাল পৌনে ৩টার দিকে ইসির যুগ্ম-সচিব জেসমিন টুলীর কাছে ২৩৬ পৌরসভার আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর তালিকা জমা দেন। আবদুস সোবহান গোলাপ সাংবাদিকদের বলেন, ২৩৬ পৌরসভায় ৩০ ডিসেম্বর ভোট হওয়ার তফসিল ছিল। আদালতের আদেশে অন্তত তিনটি স্থগিত থাকতে পারে। এর পরও আমরা ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী দল মনোনীত ২৩৬ জন মেয়র প্রার্থীর তালিকা নির্বাচন কমিশনে দিয়ে গেলাম। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমার সময় দল মনোনীত ব্যক্তিদের দলীয় প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার বিধান রয়েছে।

দলীয় প্রার্থীদের তালিকা ইসিতে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তা জমা দিল ক্ষমতাসীন দলটি।

সর্বশেষ খবর