শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জলবায়ু উদ্বাস্তু নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা

নিজামুল হক বিপুল, প্যারিস থেকে

জলবায়ু উদ্বাস্তু নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে আসার পর টানা চার দিন কেটে গেলেও সূর্যের দেখা মেলেনি বুধবার পর্যন্ত। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার প্যারিসের ঘুম ভেঙেছে ঝকঝকে সোনালি রোদের উত্তাপে। গত কয়েক দিন প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আর হিমেল বাতাসের মধ্যে প্যারিস সম্মেলনে আসা বিভিন্ন দেশের প্রায় ৪০ হাজার প্রতিনিধি সকাল  থেকে রাত পর্যন্ত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কেন্দ্র লা বুর্জে ঠাণ্ডা লড়াই চালিয়েছেন নিজ নিজ দেশের পক্ষে। গতকাল সোনালি রোদের দেখা পেয়ে অনেকেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। জলবায়ু উদ্বাস্তুদের নিয়ে আগের তুলনায় অনেক বেশি উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা ছড়িয়েছে এবারের প্যারিস সম্মেলনে। প্রতিটি আলোচনায়ই উঠে আসছে এ উদ্বেগের কথা। কী উন্নত, কী অনুন্নত— সব দেশের প্রতিনিধিই সাইট ইভেন্টগুলোয় তুলে ধরছেন নিজ নিজ দেশের মতো উদ্বাস্তু সমস্যার বিষয়গুলো। এমনকি সম্প্রতি ইউরোপে উদ্বাস্তু বিপ্লবের প্রসঙ্গটিও জায়গা পাচ্ছে ঘণ্টায় ঘণ্টায়। কেউ বলছেন নিজ দেশের অভ্যন্তরীণ এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় উদ্বাস্তুদের আশ্রয়ের বিষয়ে, আবার কেউ তুলে ধরছেন এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি জমানোর চিত্র। একে অন্যকে দায়ী করতে ছাড়ছেন না। বাংলাদেশও এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। যদিও এ ইস্যুটি জলবায়ুর সঙ্গে সম্পর্কিত কিনা তা এখনো সুরাহা হয়নি। তার পরও আলোচনা থামছে না। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এবারের জলবায়ু বৈশ্বিক নীতিমালার প্রশ্নে অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের জন্য আগের তুলনায় আরও বেশি সুরক্ষার নিশ্চয়তা চাইছেন। এর পাশাপাশি একইভাবে মানবাধিকার, স্বাস্থ্য ও ক্ষতিগ্রস্তদের ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়ে জোর দিচ্ছেন। সম্মেলনের তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সরকারি প্রতিনিধি দল নিজস্ব এক পর্যালোচনা বৈঠকে সম্মেলনের পরবর্তী দিনগুলোতে এসব বিষয়ে আরও শক্ত ভূমিকা পালনের সিদ্ধান্ত নেন। বুধবার সকালে সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সমন্বয়কারী ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ সাংবাদিকদের কাছে এবারের সম্মলনে প্রত্যাশিত চুক্তি হওয়া নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করলেও বেলা শেষে বাংলাদেশ দলেরই আরেক সদস্য ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত পর্যালোচনা বৈঠকে বলেন, ‘আমি মনে করি প্যারিস অ্যাগ্রিমেন্ট হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা এখনো আছে।’ এদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ঝড়, বন্যা, ভূমিধস ও খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সর্বোচ্চ ঝুঁকির সূচকে ছয় নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। গত এক দশকে সারা বিশ্বে এসব দুর্যোগে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সর্বোচ্চ ঝুঁকির সূচকে থাকা প্রথম তিনটি দেশ হলো হন্ডুরাস, মিয়ানমার ও হাইতি। গতকাল জার্মানির বন শহর ভিত্তিক জলবায়ু পরামর্শক গোষ্ঠী ‘জার্মান ওয়াচ’ প্রকাশিত ‘বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচক-২০১৬’-এর প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সর্বশেষ খবর