মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী

বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় জিরো টলারেন্স

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় জিরো টলারেন্স দেখাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ আইন প্রয়োগকারী সব সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিমানের ঢাকা-লন্ডন ফ্লাইট বন্ধের অজুহাত খুঁজছে ব্রিটেন সরকার। এ অবস্থায় বিশেষ করে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের    নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দিয়েছেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেউ অবৈধভাবে বিমানবন্দরে প্রবেশের চেষ্টা করলে বা প্রবেশ করলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বৈঠকে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বিমানবন্দরে নিরাপত্তার বিষয়টি বৈঠকে তোলেন। তিনি বলেন, অনেক সময় ভিআইপিদের আসা-যাওয়াকে কেন্দ্র করে অনেক লোকজন বিমানবন্দরে ঢুকে পড়ে। এতে বিমানবন্দরে নিরাপত্তার সমস্যা হয়। কোনো কোনো দেশ বিমানবন্দরের নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে ফ্লাইট বাতিলের কথা বলছে। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, বিমানবন্দরের নিরাপত্তার ব্যাপারে জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে। এ সময় অন্য দুই-একজন মন্ত্রীও আলোচনায় অংশ নেন। বৈঠকের একটি সূত্র জানায়, চোরাকারবারি, নাশকতাকারী বা কোনো জঙ্গিগোষ্ঠী যেন কোনোভাবেই বিমানবন্দর কিংবা তত্সংলগ্ন এলাকায় তত্পরতা চালাতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। নির্বিঘ্নে বিমান উড্ডয়ন, অবতরণ ও ভিআইপি, ভিভিআইপি, বিদেশি মেহমানদের চলাচলের ক্ষেত্রেও কড়া নজরদারি আরোপ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, সিভিল এভিয়েশন, গোয়েন্দা সংস্থাসহ নিরাপত্তার বিষয়ে কাউকে কোনো ধরনের ছাড় না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বৈঠকে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ও সেতু নির্মাণ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়েও আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। এদিকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে গাজীপুর ও রংপুর সিটি করপোরেশনের জন্য মহানগর (মেট্রোপলিটন) পুলিশ গঠন আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বিজয় ভট্টাচার্য এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় মেট্রোপলিটন পুলিশ আইন রয়েছে। এটা করা হয় ওই এলাকার জনগণকে অধিকতর আইনি ও পুলিশি সেবা দেওয়ার জন্য। এখানেও (গাজীপুর ও রংপুর) একই উদ্দেশ্যে আইনগুলো করা হচ্ছে। বিজয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘মন্ত্রিসভা কতগুলো অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) দিয়ে আইনটি চূড়ান্ত করতে পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলো শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছে।’ আইনের সারসংক্ষেপের তথ্যমতে, রংপুর সিটি মহানগর পুলিশের জন্য ১ হাজার ১৮৫টি এবং গাজীপুর মহানগর পুলিশের জন্য ১ হাজার ১৫২টি নতুন পদ সৃষ্টি করতে অর্থবিভাগ অনাপত্তি প্রদান করেছে। এ ছাড়া গাজীপুর ও রংপুর মহানগর পুলিশ আইন-২০১৫ এ ৮টি অধ্যায় ১১৪টি ধারা ও দুটি তফসিল রয়েছে। এদিকে অপর একটি সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছর থেকেই এ দুটি সিটিতে মহানগর পুলিশের যাত্রা শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য আইন প্রণয়নের কাজ দ্রুত শেষ করে অন্যান্য প্রশাসনিক কাঠামো এবং দাফতরিক কাজের জন্য অন্যান্য অবকাঠামো তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সর্বশেষ খবর