বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ হয়ে কোকেন যায় ইউরোপে

আলী আজম

বাংলাদেশ হয়ে কোকেন যায় ইউরোপে

স্পেনের নাগরিক সিয়াস স্পেজো জুলিয়ান আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য। তার সঙ্গে বাংলাদেশের কয়েকজনের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। গত মঙ্গলবার বিকালে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তিন কেজি কোকেনসহ জুলিয়ানকে গ্রেফতার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। যার আনুমানিক মূল্য ৬০ কোটি টাকা। গতকাল সকালে জুলিয়ানের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মাদক আইনে মামলা হয়েছে। গতকাল জুলিয়ানকে

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত রিমান্ডের আদেশের জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছেন। ডিএনসির উত্তরা সার্কেলের পরিদর্শক এ কে এম কামরুল ইসলাম জানান, মতিঝিলের প্যাসিফিক হোটেলে ওঠার কথা ছিল জুলিয়ানের। ওই হোটেলে কয়েকজন ফোন করে জুলিয়ানের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। এ ছাড়া জুলিয়ানকে ছাড়াতে বাংলাদেশের ওই চক্রটি আইনজীবীও ঠিক করেছে। তাদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। কোকেন পাচারের সঙ্গে কারা জড়িত তা জানতে জুলিয়ানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ডিএনসি সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারের পর থেকে জুলিয়ান কোনো খাবার খাচ্ছেন না। তিনি মাঝে-মধ্যে পানি পান করছেন। কলা খেলেও ভারী খাবার গ্রহণ করছেন না। তিনি বলছেন, ‘আমি মরতে চাই, বাঁচতে চাই না।’ এ ছাড়া ডিএনসি কর্মকর্তারা তার ভাষা না বুঝায় কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলেন। পরে দোভাষী এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তিনি কোকেন পাচারের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে অস্বীকার করেন। তবে জুলিয়ান জানিয়েছেন, তিনি স্পেন থেকে ব্রাজিলে যান। সেখান থেকে তার লাগেজে কে বা কারা কোকেন ঢুকিয়ে দেয়। পরে দুবাই হয়ে তিনি ঢাকায় আসেন। ডিএনসির উপ-পরিচালক (ঢাকা মেট্রো) মুকুল জ্যোতি চাকমা জানান, জুলিয়ান কোকেনের চালানটি নিয়ে নিজ দেশ স্পেনে ফিরে যেত। কারণ ব্রাজিল থেকে সরাসরি স্পেনে গেলে ব্যাপক চেকপোস্টে ধরা খাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তাই ব্রাজিল-দুবাই হয়ে বাংলাদেশ থেকে আবার স্পেনে চলে যেত। এক্ষেত্রে তাকে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক পাচারকারী দলের সদস্যরা সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশেও এদের এজেন্ট রয়েছে। তারা বাংলাদেশকে কোকেন পাচারের ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে। জুলিয়ানসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে তথ্য জানার চেষ্টা চলছে। গত মঙ্গলবার বিকালে স্পেনের নাগরিক জুলিয়ান দুবাই থেকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে (ইকে-০৫৮৬) ঢাকায় আসেন। তিন কেজি কোকেন নিয়ে তিনি আসছেন এমন একটি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে ধরতে রেইডিং টিম গঠন করা হয়। বিমানবন্দরে ব্যক্তি শনাক্ত করতে কষ্ট হলেও কোকেন রক্ষিত লাগেজটি শনাক্ত করা হয়। লাগেজটি পড়ে থাকার দুই ঘণ্টা পর জুলিয়ান লাগেজটি নিয়ে ইমিগ্রেশন ক্রস করছিলেন। এ সময় তাকে আটক করা হয়। পরে তার লাগেজের ওপরে ও নিচের কভারের ভিতর বিশেষভাবে তৈরিকৃত চেম্বারে সাদা পাউডার জাতীয় কোকেন পাওয়া যায়। যা চারটি পলিথিনের প্যাকেটে স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। কোকেনের প্যাকেটের ওপর কার্বন জাতীয় এক ধরনের কাগজ মুড়ে দেওয়া হয়েছিল। যা স্ক্যানিংয়ে ধরা সম্ভব নয়।

সর্বশেষ খবর