শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জনশক্তি রপ্তানিতে বাংলাদেশের সুযোগ বাড়বে : তোফায়েল

নিজস্ব প্রতিবেদক

জনশক্তি রপ্তানিতে বাংলাদেশের সুযোগ বাড়বে : তোফায়েল

স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) জন্য রুলস অব অরিজিনের শর্ত শিথিল করেছে উন্নত দেশগুলো। এর ফলে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধায় পণ্য রপ্তানিতে ৭৫ শতাংশ আউটসোর্সিংয়ের সুযোগ পাবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলো। এ ছাড়া সেবা খাতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার মেয়াদ (সার্ভিস     ওয়েভার) ২০৩০ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করায় জনশক্তি রপ্তানিতেও বাংলাদেশের সুযোগ বাড়বে। কেনিয়ার নাইরোবিতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স শেষে দেশে ফিরে গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় তুলে ধরেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনসহ নাইরোবিতে মন্ত্রীর সফরসঙ্গীরাও উপস্থিত ছিলেন। ১৫ থেকে ১৮ ডিসেম্বর এ কনফারেন্স হওয়ার কথা থাকলেও সমঝোতা না হওয়ায় তা ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে। বাংলাদেশ বর্তমানে এলডিসি দেশগুলোর সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করছে। সে অনুযায়ী বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এ সম্মেলনে এলডিসি দেশগুলোর নেতৃত্ব দেন। মন্ত্রী বলেন, এবারের সম্মেলনে আমাদের চারটি লক্ষ্য ছিল তার সব কটিতেই অগ্রগতি রয়েছে। এর মধ্যে রুলস অব অরিজিনের শর্ত শিথিল, সার্ভিস ওয়েভার মেয়াদ বৃদ্ধি, ট্রিপসের আওতায় ওষুধশিল্পে মেধাস্বত্ব অব্যাহতির সুবিধা ২০৩৩ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর বিষয়টি সম্মেলনে গৃহীত হওয়া এবং টিপিপির মতো আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তিগুলো যাতে ডব্লিউটিওর মূলনীতির ব্যত্যয় না ঘটায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি সম্মেলনের ঘোষণায় অন্তর্ভুক্ত করা। যুক্তরাষ্ট্রের ১১ দেশের সঙ্গে টিপিপি চুক্তিতে ভিয়েতনাম থাকায় তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের স্বার্থহানির আশঙ্কা রয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান। সার্ভিস ওয়েভারের মেয়াদ বৃদ্ধির সুযোগ বাংলাদেশ নিতে পারবে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলোয় ডাক্তার, প্রকৌশলীসহ পেশাজীবীদের পাঠাতে আমাদের আরও প্রস্তুত হতে হবে। তিনি বলেন, এটি বাণিজ্যিক বিষয়, আবেগের নয়। আমাদের চিকিৎসকদের যোগ্যতা-দক্ষতা ইউরোপে গ্রহণযোগ্যতা পেতে হবে। এ ব্যাপারে সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, সার্ভিস ওয়েভারের সুবিধা কার্যকরের ব্যাপারে ১৯টি দেশ থেকে আশ্বাস পেয়েছি। ১৬২টি দেশ রাজি হলেই একটি সিদ্ধান্তে আসা যাবে। সম্মেলন শুরুর আগে চীনের সঙ্গে চায়না রাউন্ড বৈঠক এবং সম্মেলনে মার্কিন বাণিজ্য দফতর ইউএসটিআর প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকের কথাও জানান মন্ত্রী। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে চীন আন্তরিক ছিল বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে শীর্ষস্থানীয় একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত রিপোর্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে গণমাধ্যমকে দেশের পক্ষে কাজ করার পরামর্শ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সম্মেলন শেষে দেশে ফেরার সময় রবিবার দোহা এয়ারপোর্টে বসে ইন্টারনেটে একটা খবর পড়েছি যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে ‘৩০ লাখ শ্রমিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে’। মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রতিষ্ঠানটির গবেষণার বরাত দিয়ে এ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে সেই প্রতিষ্ঠানের নাম জীবনেও শুনিনি। ভুয়া তথ্য দিয়ে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে আমাদের পোশাকশিল্পকে ধ্বংস করতে। তিনি বলেন, রানা প্লাজা ধসের পর যখন আমরা উঠে দাঁড়াতে শুরু করেছি, যখন অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্সের মতো প্রতিষ্ঠান আমাদের শ্রমমানের প্রশংসা করছে তখন এ ধরনের রিপোর্ট প্রকাশ করা দুঃখজনক।

সর্বশেষ খবর