মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
সুরক্ষা নীতিমালা অনুমোদন

চৌদ্দ বছরের নিচে গৃহকর্মী নয়, দিতে হবে ছুটিও

নিজস্ব প্রতিবেদক

গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণে ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ’ নামে একটি নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এ নীতিমালা বাস্তবায়নে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে কেন্দ্রীয়ভাবে গঠন করা হবে মনিটরিং সেল। সিটি করপোরেশন এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে এবং জেলা ও উপজেলা  পর্যায়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি করে গঠন করা হবে এ সেল। এ নীতিমালার ফলে গৃহকর্ম শ্রম হিসেবে স্বীকৃতি পাবে এবং গৃহকর্মীরা সবেতনে চার মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, এ নীতিমালা অনুমোদনের ফলে ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী গৃহকর্মীরা হালকা এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সী গৃহকর্মীরা ভারী কাজ করতে পারবেন। তাদের কাজের সময় ও বেতন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে। নীতিমালার আলোকে শ্রম আইন অনুযায়ী গৃহকর্মীরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন। নীতিমালায় গৃহকর্মীদের বিশ্রামের পাশাপাশি বিনোদনের সময় দেওয়ারও নির্দেশনা রয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নীতিমালায় বলা হয়েছে— কোনো গৃহকর্মী নিয়োগকারী বা তার পরিবারের সদস্য কিংবা অতিথিদের দ্বারা শারীরিক, মানসিক বা যৌন হয়বানির শিকার হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গৃহকর্মীদের শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরকার প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নিতে পারবে। এ ব্যাপারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে স্বরাষ্ট্র, শ্রম ও কর্মসংস্থান, মহিলা ও শিশুবিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ও সুস্পষ্ট নির্দেশাবলি প্রদান করবে। তিনি বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী, অসুস্থ অবস্থায় কোনো গৃহকর্মীকে দিয়ে কাজ করানো যাবে না। নিয়োগকারীকেই নিজের অর্থে গৃহকর্মীর চিকিৎসা করাতে হবে। এ ছাড়া গৃহকর্মীকে তার নিজের ধর্ম পালনের সুযোগ দিতে হবে। কর্মরত অবস্থায় কোনো গৃহকর্মী দুর্ঘটনার শিকার হলে চিকিৎসাসহ দুর্ঘটনা ও ক্ষতির ধরন অনুযায়ী নিয়োগকারীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা সম্পর্কে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দুই বছর ধরে এ নীতিমালা নিয়ে তার মন্ত্রণালয় কাজ করেছে। শেষ পর্যন্ত এর একটি চূড়ান্ত রূপ দিতে পারায় তার নিজের কাছে ভালো লাগছে। তিনি বলেন, তার মেয়াদে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় যে কটি ভালো কাজ করেছে তার মধ্যে এ নীতিমালাটি অন্যতম। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, গতকালের বৈঠকে মন্ত্রিসভা প্রাইভেটাইজেশন কমিশন ও বিনিয়োগ বোর্ড একীভূত হওয়ায় ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ আইন’-এর খসড়ায়ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এ ছাড়া মন্ত্রিসভা বৈঠকে জাতীয় সংসদে ২০১৬ সালের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ১৯৫৭ সালে প্রণীত বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন আইনটিকে বাংলায় অনুবাদ করে এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে। পাশাপাশি এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক আইনের খসড়ায়ও নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর